HomeBharatNorth East Indiaমিয়া মুসলিমদের বিয়ে না করার অনুরোধে সরব অসমের যুবক সংগঠন

মিয়া মুসলিমদের বিয়ে না করার অনুরোধে সরব অসমের যুবক সংগঠন

- Advertisement -

গুয়াহাটি, ৫ ডিসেম্বর: অসমের বুকে যেন এক নতুন ঝড় উঠেছে (Assam youth organisation)। উচ্ছেদ অভিযানের তৃতীয় পর্যায়ে (Eviction Drive 3.0) স্থানীয় যুবক সমাজের একজন নেত্রী দাঁড়িয়ে বললেন, “আমরা অসমীয়া। ‘মিয়া’ মুসলিমরা অসমীয়া নয়। তাদের আশ্রয় দিও না, তাদের সঙ্গে বিয়ে করো না। এতে তোমরা পুরো অসমকে বিপদে ফেলবে। অসম আর এসব সহ্য করবে না!”

গত কয়েকদিনে গোলাঘাট, গোয়ালপাড়া এবং ডাহিকাটা রিজার্ভ ফরেস্টে চলছে অভিযান, যাতে শত শত বাংলা-ভাষী মুসলিম পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে যুবকদের এই ‘ডোন্ট গিভ শেল্টার, ডোন্ট ম্যারি’ ক্যাম্পেইন যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে।এই অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু গোলাঘাটের নাম্বর সাউথ রিজার্ভ ফরেস্ট।

   

কর্মীদের নিরাপত্তা প্রশ্নে ইন্ডিগোর ফ্লাইট ডিউটি নিয়ম নিয়ে তোলপাড়

গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ৩৫০টিরও বেশি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বাংলা-ভাষী ‘মিয়া’ মুসলিম। বন বিভাগের বলপ্রয়োগে প্রায় ১০০০ বিঘা জমি মুক্ত করা হয়েছে। একজন স্থানীয় নেত্রী, যিনি আসাম যুবক সমাজের সঙ্গে যুক্ত, এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আপার অসম ছেড়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চলে যাও, নইলে পরিণতি ভোগ করবে।

মিয়াদের আশ্রয় দিলে তোমাদেরও শাস্তি মিলবে।” এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে, এবং এর ফলে ইসলামপুর, হোয়াই এবং বারপেটা থেকে অনেকে পূর্ব অসম ছেড়ে পশ্চিমাঞ্চলে ফিরে যাচ্ছেন। জাতীয় সংগ্রামী সেনার নেতা সিতু বারুয়াহও এক ভিডিওতে বলেছেন, “চুপ করো মিয়া… আপার অসম ছেড়ে যাও।”

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই অভিযানের পক্ষে সাড়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “অবৈধ মিয়াদের আমার আমলে শান্তি মিলবে না। আমরা শুধু সন্দেহজনক বিদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। স্থানীয় অসমীয়াদের জমি দখল আমরা অন্যায় বলি না।”

গত নভেম্বরে গোয়ালপাড়ায় ৫৮৮টি ঘর ভেঙে ১৫৩ হেক্টর জমি মুক্ত করা হয়েছে, এবং আগামী দিনগুলোতে আরও ৬০০ পরিবারের নামে নোটিশ জারি হয়েছে। শর্মা জামুগুড়িহাটে সাংবাদিকদের বলেছেন, “এই অভিযান চলতেই থাকবে। বহুবিবাহের বিরুদ্ধে নতুন আইন আনব, যাতে সাত বছরের কঠোর কারাদণ্ড হবে।” এই কথাগুলো যেন যুবকদের সতর্কবাণীকে আরও জোরালো করেছে।

কিন্তু এর পেছনে ইতিহাস অনেক গভীর। ‘মিয়া’ শব্দটি মূলত সম্মানসূচক, পার্সি ভাষা থেকে এসেছে, যা বাংলা-ভাষী মুসলিমদের নির্দেশ করে। ব্রিটিশ আমলে ২০শ শতাব্দীর শুরুতে তারা ব্রহ্মপুত্রের চর-চাপড়িতে বসতি স্থাপন করে, জমি সারিয়ে চাষাবাদ শুরু করে। কিন্তু অসমের আদিবাসী সংগঠনগুলো তাদের বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী বলে চিহ্নিত করে। এখন এই শব্দটি অপমানজনক হয়ে উঠেছে। অসম আন্দোলনের (১৯৭৯-৮৫) পর থেকে এই উত্তেজনা চলছে, এবং বিজেপি সরকারের আমলে তীব্রতর হয়েছে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular