গুয়াহাটি: অসমের রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। অসম বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ড. নুমাল মহন্ত একটি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে ধরেছেন, যা রাজ্যের শান্তি ও জাতীয় নিরাপত্তাকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। ড. মহন্তের দাবি, দিল্লির সাম্প্রতিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক মুসলিম ডাক্তারের জড়িত থাকার পর, অসমের সাংসদ বাদরুদ্দিন আজমালের হাজি আব্দুল মজিদ মেমোরিয়াল হাসপাতালেও অনুরূপ ‘উপাদান’ থাকার সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না।
এই অভিযোগটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে এবং রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ড. মহন্ত বলেছেন, “জাতীয় নিরাপত্তা কোনো আলোচনার বিষয় নয়। আমি অসমের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এনআইএকে আহ্বান জানাই যেন আজমালের সঙ্গে যুক্ত সকল প্রতিষ্ঠান এবং অনুরূপ ইসলামিক সংগঠনগুলির তাৎক্ষণিক তদন্ত ও কঠোর পরীক্ষা করা হয়।
নিখোঁজ ব্যাক্তির নাম কাটা নিয়ে BLO কে হত্যার হুমকি জামিরুলের
শিক্ষিত পেশাদাররা যখন জঙ্গি হয়ে উঠছে, তখন আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে পারি না।”ঘটনার পটভূমি ফিরে তাকালে, ১০ নভেম্বর দিল্লির রেড ফোর্টের কাছে একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে ১৫ জন নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়। তদন্তে প্রকাশ পড়ে যে, এটি ছিল জৈশ-ই-মোহাম্মদের ‘হোয়াইট কলার টেরর মডিউল’-এর কাজ। বিস্ফোরণকারী ছিলেন পুলওয়ামার ড. উমর উন নাবী, যিনি ফরিদাবাদের আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এই ঘটনায় এনআইএ চারজন ডাক্তারকে গ্রেফতার করে ড. মুজাম্মিল আহমদ গনাই, ড. আদিল মজিদ রাদার, ড. শাহিন শাহিদ এবং ড. শাহিন সাইদ। এদের মধ্যে অনেকেই কাশ্মীরের বাসিন্দা এবং আল ফালাহের মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা করতেন। তদন্তে জানা গেছে, এরা ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক পদার্থ, অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করেছিল এবং বিদেশী হ্যান্ডলারদের থেকে এনক্রিপ্টেড অ্যাপে ৪২টি বোমা তৈরির ভিডিও পেয়েছিল। এমনকি, ২৬ লক্ষ টাকার টেরর ফান্ড সংগ্রহ করে ৩২টি গাড়ি বোমার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
আল ফালাহের ২০০-এর বেশি ডাক্তার ও কর্মী এখন তদন্তের আওতায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগীসংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে।এই ঘটনার ছায়ায় ড. নুমাল মহন্তের অভিযোগ উঠে এসেছে। আসামের বিজেপি নেতা এবং ডেপুটি স্পিকার হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের নিরাপত্তা ও জাতীয়তাবাদী বিষয়ে সোচ্চার। তাঁর মতে, শিক্ষিত মুসলিম পেশাদারদের মধ্যে র্যাডিকালাইজেশনের প্রবণতা দেখা দিয়েছে, যা অসমের মতো সংবেদনশীল রাজ্যে ঝুঁকির সৃষ্টি করছে।
বাদরুদ্দিন আজমাল, এআইউডিএফ-এর প্রধান এবং দৈগেরগাঁও লোকসভা সাংসদ, তাঁর ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য পরিচিত। হাজি আব্দুল মজিদ মেমোরিয়াল হাসপাতালটি দৌলতবাড়ের কাছে অবস্থিত এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য সেবা প্রদান করে আসছে।
কিন্তু ড. মহন্তের দাবি, এখানে আল ফালাহ-এর মতো অনুরূপ উপাদান থাকতে পারে, যা রাজ্যের শান্তিকে হুমকির মুখে ফেলবে। তিনি বলেছেন, “আমরা কোনো ধর্মীয় সংগঠনকে টার্গেট করছি না, কিন্তু নিরাপত্তার নামে কোনো সন্দেহের সুযোগ দিতে পারি না।”
