নয়ডা: উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় একদিনে সামনে এল দুটি ভয়াবহ ঘটনা। একদিকে নারীর নৃশংস খুন, অন্যদিকে বিষাক্ত গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু। সেক্টর ১০৮-এর একটি নর্দমা থেকে উদ্ধার হয়েছে এক মহিলার মুণ্ডহীন (Noida naked body) ও হাতের তালুবিহীন নগ্ন মৃতদেহ, আর সেক্টর ৬৩-এর ছোটপুর কলোনিতে সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে প্রাণ হারিয়েছেন দুই ভাই। এই দুই ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে নয়ডাজুড়ে।
সেক্টর ১০৮-এর একটি নর্দমায় সন্দেহজনকভাবে ভাসতে দেখা যায় এক নারীর নগ্ন মৃতদেহ। স্থানীয়রা বিষয়টি দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে দেখেন, সেটি মাথা ও দুই হাতের তালুবিহীন। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দেহের অবস্থা দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি পরিকল্পিত খুন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার মাথা এবং দুই হাতের তালু কেটে ফেলা হয়েছে। দেহ নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। পরিচয় মুছে ফেলতেই মাথা ও হাত কেটে ফেলা হতে পারে বলে সন্দেহ। ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
নয়ডা পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তৈরি হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)। ঘটনার সময়কাল, দেহ ফেলার স্থান, অভিযুক্তদের সম্ভাব্য যাতায়াত সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা, যৌন অপরাধ, অথবা মানবপাচার চক্রের যোগ থাকতে পারে।
ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক সময়, খুনের আগে নির্যাতন হয়েছে কি না, এবং কীভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে।
একই দিনে আর এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে সেক্টর ৬৩–এর ছোটপুর কলোনিতে। বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কের স্ল্যাব ভেঙে ভিতরে পড়ে যান ৪০ বছরের চন্দ্রভান। তাঁকে বাঁচাতে সঙ্গে সঙ্গেই ভিতরে ঝাঁপ দেন তাঁর ছোট ভাই ২৬ বছরের রাজু। কিন্তু ট্যাঙ্কে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাসে দু’জনই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়েন।
তাঁদের বাঁচাতে প্রতিবেশী হেমন্ত সিং ট্যাঙ্কের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে তিনিও বিষাক্ত ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। কিন্তু চিকিৎসকরা চন্দ্রভান ও রাজুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্যাস মৃত্যুর ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের সময় নিরাপত্তা বিধি মানা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।


