অস্বস্তি বাড়ল মমতার ‘বন্ধু’ মুখ্যমন্ত্রীর! আপাতত তিহাড় জেলেই কেজরি

দিল্লি হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জামিনের আর্জি জানিয়ে রবিবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আর্জিতে আগামী বুধবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিল শীর্ষ…

No relief for Arvind Kejriwal by Supreme Court order

দিল্লি হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জামিনের আর্জি জানিয়ে রবিবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আর্জিতে আগামী বুধবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিল শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, এই সময়ের মধ্যে ইডির মামলায় দিল্লি হাইকোর্ট যদি কোনও রায় দেয়, তবে উচ্চ আদালতের সেই সিদ্ধান্ত আগে দেখে নিতে চায় তারা। ফলে আবগারি দুর্নীতি মামলায় আপাতত দিল্লির তিহাড় জেলেই থাকতে হবে আপ প্রধানকে।

বিচারপতি মনোজ মিশ্র এবং এস ভি ভাট্টির সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চের সামনে এ দিন সিনিয়র অ্যাডভোকেট অভিষেক মনু সিংভি এবং বিক্রম চৌধুরী কেজরিওয়ালের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) রাজু এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এর পক্ষে সওয়াল করেন।

   

এ দিনের সওয়ালে কেজরিওয়ালের পক্ষে আইনজীবী সিংভি বলেন যে, দিল্লি হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের জামিনের আদেশের জন্য অপেক্ষা করেনি। হাইকোর্ট যদি আদেশ না দেখে স্থগিত করতে পারে, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট কেন হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ দিতে পারবে না?

জবাবে বিচারপতি মিশ্র বলেন, “হাইকোর্ট যদি ভুল করে থাকে, তাহলে কি তা পুনরাবৃত্তি করা উচিত?”

সিংভি আরও বলেন যে, জামিনের আদেশে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ ছিল নজিরবিহীন এবং কেজরিওয়ালের পালিয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা নেই। বেঞ্চ ইঙ্গিত দিয়েছে যে চূড়ান্ত আদেশটি অবিলম্বে প্রত্যাশিত হতে পারে এবং সমস্ত পক্ষকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে। এতে জামিন পাওয়ার পর সময় নষ্ট হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিংভি।

জিও হাতছাড়া হতে পারে আম্বানিদের? মোদীর নতুন আইনে শঙ্কায় নেটওয়ার্ক কোম্পানিরা

বলেন “কেন কেউ অন্তর্বর্তী সময়ে মুক্ত হতে পারেন না? কারণ আমার মক্কেলের পক্ষে রায় আছে।”

বিচারপতি মিশ্রা জবাবে বলেন, “আমরা যদি এখন একটি আদেশ পাশ করি, তাহলে আমরা ইস্যুটিকে পূর্বাভাস দেব। এটি অধঃস্তন আদালত নয়, এটি একটি উচ্চ আদালত।” কেন অপেক্ষা করা যাচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিরা।

আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। ইডি মুখ্যমন্ত্রীর জামিন ৪৮ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল। যা গ্রাহ্য হয়নি। বিচারক কেজরিকে জামিন দিয়ে দেন। শুক্রবার সকালে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। ইডির আবেদনে সাড়া দিয়ে কেজরিওয়ালের জামিন স্থগিত রাখে দিল্লি হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির পর বিচারপতি সুধীরকুমার জৈন এবং বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজার অবকাশকালীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয় যে, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত পরবর্তী নির্দেশ ঘোষণা করা হবে।

আবগারি মামলায় গত ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। কিন্তু তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। পরে লোকসভা ভোটের আগে প্রচারের জন্য তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছিল। সেই মেয়াদ শেষ হলে আবার তিনি তিহাড় জেলে ফিরে যান। বৃহস্পতিবার আম আদমি পার্টির প্রধানের স্থায়ী জামিনের মঞ্জুর হয় রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। ইডির আইনজীবী তথা কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু জানান, বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ইডির তরফে জামিনের বিরোধিতা করে জমা দেওয়া নথিগুলির যথাযথ ভাবে বিবেচনা করার কথা ছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের। অথচ সেগুলি পর্যালোচনা না করেই একতরফা ভাবে জামিন দেওয়া হয়েছে আপ প্রধানকে।