‘অনুশোচনা নেই , বাকস্বাধীনতায় আঘাত করা হয়েছে’, বিবৃতি পাক গুপ্তচরের

হরিয়ানার হিসারের জনপ্রিয় ট্রাভেল ভ্লগার জ্যোতি মালহোত্রাকে গুপ্তচরবৃত্তি এবং পাকিস্তানপন্থী (pakistani) প্রচার চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের সময় জ্যোতি কোনও অনুশোচনা প্রকাশ করেননি বা…

pakistani spy is telling lie

হরিয়ানার হিসারের জনপ্রিয় ট্রাভেল ভ্লগার জ্যোতি মালহোত্রাকে গুপ্তচরবৃত্তি এবং পাকিস্তানপন্থী (pakistani) প্রচার চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের সময় জ্যোতি কোনও অনুশোচনা প্রকাশ করেননি বা ভুল স্বীকার করেননি, বরং দাবি করেছেন যে তিনি তার বাকস্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করছিলেন।

জ্যোতির ইউটিউব চ্যানেল ‘ট্রাভেল উইথ জো’-তে ৩.৮৫ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেন, যেখানে দাবি করেন যে এই হামলার জন্য কোনও পাকিস্তানি (pakistani)দায়ী নয়।

   

সূত্র জানায়

সূত্র জানায়, “তাকে পাকিস্তানপন্থী (pakistani)প্রচার চালানোর জন্য বলা হয়েছিল, যা যুদ্ধের একটি নতুন রূপ।” তদন্তে আরও প্রকাশ পেয়েছে যে, জ্যোতিকে তার পাকিস্তানি হ্যান্ডলাররা অতিরিক্ত কাজ দিয়েছিল, যা পুলিশ এখন তদন্ত করছে। পাকিস্তানপন্থী প্রচার ছাড়াও, পুলিশ জানতে চাইছে জ্যোতি পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে কোনও সংবেদনশীল সামরিক বা অ-সামরিক সম্পদের তথ্য ফাঁস করেছেন কিনা।

তদন্তের বিস্তার

হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, জ্যোতির অন্যান্য বন্ধু, বিশেষ করে যারা পাকিস্তান (pakistani)ভ্রমণ করেছেন এমন ট্রাভেল ইনফ্লুয়েন্সাররাও তদন্তের আওতায় রয়েছেন। পুলিশ আগেই জানিয়েছিল যে, জ্যোতিকে পাকিস্তানপন্থী (pakistani)প্রচারের জন্য একটি সম্পদ হিসেবে তৈরি করা হচ্ছিল। জ্যোতি ২০২৩, ২০২৪ এবং ২০২৫ সালের মার্চে তিনবার পাকিস্তান ভ্রমণ করেছেন, যা পহেলগাঁও হামলার আগে।

তার পাকিস্তান ও কাশ্মীরে স্বল্প সময়ের মধ্যে ভ্রমণ এবং নির্দিষ্ট স্থান বা বিষয়বস্তু সমন্বিত ট্রাভেল ভিডিও আপলোড করতে বলা হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাকিস্তানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত ১১ জন সন্দেহভাজনের একজন হরকিরাত সিং জ্যোতিকে পাকিস্তানি (pakistani)দূতাবাসের কর্মকর্তা এহসান-উর-রহিম ওরফে ড্যানিশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।

গত সপ্তাহে ড্যানিশকে ভারত থেকে বহিষ্কার করা হয়। হরকিরাত, যিনি হরিয়ানার শিখ গুরুদ্বারা ম্যানেজমেন্ট কমিটির কর্মী, জ্যোতিকে দু’বার ভিসা পেতে সাহায্য করেন এবং তাকে শিখ তীর্থযাত্রীদের একটি দলের (জাথা) সঙ্গে পাকিস্তানে পাঠান।

এই জাথা প্রতি বছর চারবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পাকিস্তান ভ্রমণ করে। হরকিরাতের ফোন জব্দ করা হয়েছে, এবং ইলেকট্রনিক প্রমাণ পর্যালোচনার পর তাকে তদন্তে যোগ দিতে বলা হবে। রবিবার হরকিরাতকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে সম্পর্ক

পুলিশ তদন্ত করছে, জ্যোতি পহেলগাঁও হামলার পরিকল্পনায় পাকিস্তানকে সহায়তা করেছেন কিনা। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। জ্যোতির ভিডিও, যেখানে তিনি হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী না করার পক্ষে কথা বলেন, তদন্তকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

Advertisements

সূত্র জানায়, জ্যোতির পাকিস্তান (pakistani)ভ্রমণ এবং তার ভিডিওতে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু প্রচারের নির্দেশ ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্যোতি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রেকি করেছিলেন, যা তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ

হরিয়ানা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করে, যখন প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি পাকিস্তানি(pakistani) গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করছিলেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্যোতি একাধিকবার পাকিস্তান ভ্রমণ করেছেন এবং তার পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল। পুলিশ জানায়, জ্যোতি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার জন্য একটি সম্পদ হিসেবে কাজ করছিলেন, এবং তার ভ্রমণ ভিডিওগুলো সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য তথ্য সংগ্রহের আড়াল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।

তদন্তে আরও জানা গেছে, জ্যোতির সঙ্গে পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, এবং তিনি ভারতের সামরিক ও অ-সামরিক সম্পদের তথ্য ফাঁস করেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্যোতির গ্রেপ্তারের পর উত্তরপ্রদেশের একজন ব্যবসায়ীকেও পাকিস্তানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা এই গুপ্তচর নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি নির্দেশ করে।

কোন অস্ত্র স্বর্ণ মন্দিরকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করে, ব্যর্থ হয় পাকিস্তানের মিসাইল হামলা?

অন্যান্য সন্দেহভাজন

জ্যোতির সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য ইনফ্লুয়েন্সারদেরও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। ইন্সটাগ্রামে প্রকাশিত একটি পোস্টে বলা হয়, জ্যোতি সহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা পাকিস্তানের জন্য গোপন তথ্য ফাঁস করছিল। পুলিশ জানায়, জ্যোতির ভ্রমণ ভিডিওগুলো কেবল ভ্রমণের জন্য নয়, বরং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত হতো। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্যোতির পাকিস্তানি সংযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে পাঁচটি চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

এক্স-এ প্রকাশিত পোস্টগুলোতে জ্যোতির গ্রেপ্তার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ইন্ডিয়া টুডে-র একটি পোস্টে বলা হয়, জ্যোতির পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে সম্পর্ক এবং পুরী জগন্নাথ মন্দিরের রেকি করার বিষয়টি তদন্তের অংশ। আরেকটি পোস্টে বলা হয়, জ্যোতি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা প্রশিক্ষিত ছিলেন এবং তার পাকিস্তানি হ্যান্ডলারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

জ্যোতি মালহোত্রার গ্রেপ্তার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি নতুন ধরনের হুমকির ইঙ্গিত দেয়, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। তার পাকিস্তান ভ্রমণ, পহেলগাঁও হামলার আগে ভিডিও প্রকাশ এবং সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসের অভিযোগ তদন্তকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। পুলিশ এখন তার সহযোগীদের তদন্ত করছে এবং এই গুপ্তচর নেটওয়ার্কের পূর্ণাঙ্গ চিত্র উদঘাটনের চেষ্টা করছে। এই ঘটনা ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।