নয়াদিল্লি: বিহারের ‘ভেঙে পড়া’ শিক্ষাব্যবস্থার জন্য কংগ্রেস-আরজেডিকে একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। শনিবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত কৌশল দীক্ষান্ত সমারোহে বিহারের পরিযায়ী সমস্যার কারণও তুলে ধরলেন তিনি। এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নিজেদের শাসনকালে বিহারের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে কংগ্রেস-আরজেডি। যে কারণে রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে কাজের জন্য বাধ্য হয়ে ভিনরাজ্যে যেতে হয়েছে”।
সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আজকের প্রজন্ম ভাবতেও পারবে না গত দশক আগে বিহারের শিক্ষাব্যবস্থার কি দশা ছিল। ছিল না নিয়োগ, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল একাধিক স্কুল। বাবা-মায়েরা ছেলেমেয়েদের পড়াশুনো করানোর পরিবর্তে ভিনরাজ্যে কাজে পাঠিয়ে দিতেন। দিল্লি, মুম্বই, বারাণসির মত শহরে কাজের আশায় চলে গিয়েছিলেন বিহারের যুবকরা। সেখান থেকেই বিহারের পরিযায়ী সমস্যার শুরু।” কিন্তু নীতিশ কুমারের Nitish Kumar) হাত ধরে বিহারে শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে বলে দাবী করেন নরেন্দ্র মোদী।
“নীতিশ কুমারকে বিহারের মানুষ ভরসা করে। এনডিএ সরকার ধীরে ধীরে বিহারকে পুনরোজ্জীবিত করছে”। বিহারে সম্প্রতি, ৬২,০০০ কোটি টাকার যুব-উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে জন নায়ক কাপুরি ঠাকুর স্কিল ইউনিভার্সিটিরও উদ্বোধন করেছেন তিনি। পাশাপাশি, আরজেডি-কংগ্রেস জমানার থেকে শিক্ষাব্যবস্থার বাজেট বহুগুন বাড়ানো এবং ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে দাবি করে নীতিশ কুমারের ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী (Narendra Modi)।
“বিহারের মানুষ সরকারের উপর ক্ষুব্ধ”, দাবী করেছিলেন তেজস্বী
নির্বাচন আবহে এনডিএ জোট সহ মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের (Nitish Kumar) বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে আসছেন আরজেডি (RJD) নেতা তেজস্বী যাদব। রাহুলের (Rahul Gandhi) ভোটার অধিকার যাত্রার পর বিহার অধিকার যাত্রা করেছেন তিনি। সেখান থেকে জেডিইউ-এর উপর তোপ দেগে তেজস্বী (Tejaswi Yadav) বলেছিলেন, “বিহারের জনগণ সরকারের উপর ক্ষুব্ধ”।
“বিহারকে নতুন করে গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তেজস্বীজি এই যাত্রা করছেন”, বলে উল্লেখ করেছিলেন আরজেডি সাংসদ সঞ্জয় যাদব। যুবসমাজের জন্য চাকরি, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, নারীদের অধিকার, শিক্ষকদের সম্মান এবং বিহারে শিল্প গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে আরজেডি। বিহারের শিক্ষা-স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা, বেকারত্ব-অপরাধ-দুর্নীতি বৃদ্ধি থেকে নারী সুরক্ষা, বিরোধীদের কন্ঠে শোনা গিয়েছে সরকারের ব্যর্থতার একাধিক অভিযোগ। শুধু তাই নয়, “নীতিশ কুমার বৃদ্ধ, তাঁর পক্ষে বিহারের দ্রুত উন্নয়ন করা সম্ভব না”, বলেও কটাক্ষ করেছিলেন তেজস্বী।
বস্তুত, আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বিহারের বিধানসভা নির্বাচন (Bihar assembly election)। নভেম্বরে শেষ হয়ে যাচ্ছে বিধানসভার মেয়াদ। তার আগে জোরকদমে প্রচারে নেমেছে শাসক-বিরোধী। আসন্ন নির্বাচনে ইন্ডি-জোটের মুখ হিসেবে তেজস্বীকেই দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিহারের জমি ছাড়তে নারাজ এনডিএ-এর সম্পূর্ণ আস্থা নীতিশের উপর। কার হাতে যাবে বিহারের বাগডোর, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।