বিহারের সাম্প্রতিক নির্বাচনে নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) নেতৃত্বে এনডিএ বিপুল জয় অর্জন করলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজর কেড়েছে জেডিইউ–র হঠাৎ ‘নীরবতা’। ভোটের দিন ও পরবর্তী সময়ে দলের সুপ্রিমো নীতীশ কুমারকে প্রকাশ্যে খুব বেশি দেখা যায়নি। শুধু একবারের জন্য জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি পোস্ট করেছেন, আর তার বাইরে কোনও সরাসরি মন্তব্য বা উচ্ছ্বাস প্রকাশ হয়নি।
দলের অন্য মুখপাত্রদের তরফ থেকেও জয় উদযাপনের মতো কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি। এই নীরবতার পেছনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেখছেন। যদিও নির্বাচনের আগে নীতীশকে মুখ্য নেতৃত্ব ধরে এনডিএ নির্বাচনে লড়েছে, জয় ঘোষণার দিন তার মুখ্য নেতা হিসেবে শপথ নেওয়ার কোনও স্পষ্ট ঘোষণা ছিল না।
দিল্লিতে, বিজেপি পার্টি অফিস থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেভাবে ভাষণ দিলেন, সেখানে এনডিএ জমানায় সুশাসন এবং আরজেডি জমানার ‘জঙ্গলরাজ’ শেষ হওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও এককাট্টা এনডিএ–র লড়াই সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলা হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এদিনের নীরবতা দলের জন্য একটি কৌশল বা পরিকল্পিত বিরতিই হতে পারে।
যদিও বিহারের দুই দশকের শাসনকালকে ভোটাররা কিছুটা ক্লান্তির দৃষ্টিতে দেখছেন, তবু নীতীশের প্রতি রোষ বা ক্ষোভ দেখা যায়নি। বরং তার শাসনকালে রাজ্যে যে উন্নয়নমূলক পরিবর্তন এসেছে, তা নিয়ে অনেক ভোটারের মধ্যে কৃতজ্ঞতার ভাব লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন সেক্টর যেমন অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পে উন্নতি ভোটারদের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই কৃতজ্ঞতার মধ্যে ভবিষ্যতের আরও উন্নতির প্রত্যাশা থাকা সত্ত্বেও, ভোটের ফল প্রমাণ করেছে যে বিহারের মানুষ এখনও নীতীশকে সেরা বিকল্প হিসেবে মনে করছেন।
জাতিগত সমীকরণ নিয়েও বিশেষ নজর দেওয়া হয়। নীতীশ কুড়মি সম্প্রদায়ের সদস্য। যদিও কুড়মিরা রাজ্যের মোট জনসংখ্যার মাত্র ২.৮%। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ছোট অংশের মধ্যেও নীতীশ দেখিয়েছেন যে সুশাসন এবং জনকল্যাণমূলক নীতির মাধ্যমে সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে জনপ্রিয়তা বজায় রাখা সম্ভব। তিনি একপেশে সমর্থন নয়, বরং রাজ্যের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন।


