পাটনা: বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক নাটকীয় মোড়। সম্প্রতি ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (NDA)-এর আসন বন্টন ঘোষণার পরই জেডি(ইউ) নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্দল বিধায়ক পাপ্পু যাদব। পূর্ণিয়ার এই নেতা স্পষ্ট ভাষায় দাবি করেছেন, আসন-বণ্টনের এই সূত্রটি তৈরিই করা হয়েছে নীতীশ কুমারকে রাজনৈতিকভাবে ‘শেষ’ করে দেওয়ার জন্য, যার নেপথ্যে জেডি(ইউ) নেতা সঞ্জয় ঝা-র বড় ভূমিকা রয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ৷
রবিবার (১২ অক্টোবর) এনডিএ জোট তাদের আসন ভাগাভাগির ফর্মুলা প্রকাশ করে। ঐতিহাসিক সমতা বজায় রেখে এবার ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) এবং জনতা দল (ইউনাইটেড) (JD(U)) উভয় দলই ১০১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। জোটের অন্য শরিকদের মধ্যে লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) পেয়েছে ২৯টি আসন, আর রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা (RLM) এবং হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (HAM) উভয়কেই ৬টি করে আসন দেওয়া হয়েছে।
সঞ্জয় ঝা-র বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ
এই ঘোষণার পরপরই পাপ্পু যাদব সোশ্যাল মিডিয়া ‘এক্স’ (X)-এ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি জেডি(ইউ)-এর জাতীয় কার্যনির্বাহী সভাপতি সঞ্জয় কুমার ঝা-র বিরুদ্ধে “ষড়যন্ত্রের” অভিযোগ তুলেছেন, যার মূল লক্ষ্য নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা। যাদব বলেন, “আজ সঞ্জয় ঝা তাঁর লক্ষ্য পূরণ করলেন। নীতীশকে শেষ করার ষড়যন্ত্র সম্পন্ন।”
জোটের সমতা, জেডি(ইউ)-এর দুর্বল অবস্থান Nitish Kumar Political End
বিশেষত উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে আরজেডি-নেতৃত্বাধীন সরকারের ১৫ বছরের শাসন শেষ করার পর এটিই বিহারে প্রথম বিধানসভা নির্বাচন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ) জোটের প্রধান শরিক হওয়া সত্ত্বেও বিজেপির চেয়ে বেশি আসনে লড়ছে না। ঐতিহ্যগতভাবে, জেডি(ইউ) রাজ্য নির্বাচনে বিজেপির চেয়ে বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত। ২০২০ সালে জেডি(ইউ) ১১৫টি এবং বিজেপি ১১০টি আসনে লড়েছিল। তবে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেই এই পরিবর্তন স্পষ্ট হয়ে যায়, যখন বিজেপি জেডি(ইউ)-এর চেয়ে একটি বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এবার দুটি দলেরই সমান সংখ্যক আসনে সম্মত হওয়া শাসক জোট-এর মধ্যে জেডি(ইউ)-এর দুর্বলতা এবং রাজ্যে বিজেপির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে।
আগামী ৬ ও ১১ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ১৪ নভেম্বর ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এই আসন-বণ্টন ও তার পরবর্তী রাজনৈতিক মন্তব্যের জেরে বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন চরম উত্তপ্ত।