বিহার বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য। বৃহস্পতিবার বিহারে পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য বিজেপির নির্বাচনী রণনীতি চূড়ান্ত করা। তবে রাজনৈতিক মহলের নজর কেড়েছে পাটনার মউর্য হোটেলে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) সঙ্গে শাহের প্রায় ২০ মিনিটের একান্ত বৈঠক।
জানা গেছে, এই বৈঠকে শুধু অমিত শাহ ও নীতীশ কুমারই নয়, উপস্থিত ছিলেন জেডিইউ-র কার্যনির্বাহী সভাপতি সঞ্জয় কুমার ঝা এবং বিহারের মন্ত্রী বিজয় কুমার চৌধুরীও। যদিও বৈঠকের আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ্যে আসেনি, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে আসন বণ্টন এবং এনডিএর ঐক্য রক্ষাই ছিল মূল আলোচনার বিষয়।
বিহার ভোটকে সামনে রেখে বিজেপি ১৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত “ঘর-ঘর সংযোগ অভিযান” চালু করছে। এই প্রচারের মাধ্যমে বুথস্তরের নেতা ও কর্মীরা সরাসরি সাধারণ ভোটারদের দ্বারে পৌঁছে যাবেন। তাঁদের লক্ষ্য হবে কেন্দ্র ও রাজ্যের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি তুলে ধরা এবং ভোটারদের আস্থা অর্জন করা।
অমিত শাহ সফরের শুরুতে রওনা দেন রোহতাস জেলার ডেহরি-অন-সনে। সেখানে তিনি বিজেপির আঞ্চলিক বৈঠকে অংশ নেন। সংগঠনকে আরও সুদৃঢ় করার পাশাপাশি বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করার নির্দেশ দেন তিনি। পরে তিনি বেগুসরাইয়ে পৌঁছে বিকেলে দ্বিতীয় বৈঠকে যোগ দেন এবং স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন।
নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপি ও জেডিইউ-র মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। তবে শাহ-নীতীশ বৈঠকের পর সেই জল্পনার অবসান হতে পারে বলেই ধারণা। বিজেপি চাইছে জেডিইউ-কে পাশে রেখে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে। অন্যদিকে, নীতীশ কুমারও জানেন এককভাবে ভোটে লড়াই করা ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে জোটকে ধরে রাখাই দুই দলের অগ্রাধিকার।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০ মিনিটের এই বৈঠক শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল না। বরং নির্বাচনী সমীকরণে ভারসাম্য আনার জন্যই এর আয়োজন করা হয়েছিল। যদিও দুই পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, আসন বণ্টনের প্রাথমিক রূপরেখা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন দুই নেতা।
দিনের শেষে, সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার সময় অমিত শাহ পাটনা বিমানবন্দর থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যেও তাঁর এই সফর বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।