বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার (Nitish Kumar) বিরোধী নেতা লালু যাদবের দেওয়া অলি সাখা বা শান্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। যখন সাংবাদিকরা লালু যাদবের (Lalu Yadav) মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন যে “তার দরজা খোলা রয়েছে”, নীতিশ কুমার স্পষ্ট ভাষায় জানান, তাঁর জন্য কোনো ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।
নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ইউনাইটেড) বা JD(U) এক সময় লালু যাদবের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD) এবং অন্যান্য দল নিয়ে গঠিত মহাগঠবন্ধন (Grand Alliance)-এর অংশ ছিল। তবে কিছু তিক্ততার কারণে নীতিশ কুমার সেই জোট ছেড়ে দিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA)-তে পুনরায় যোগ দেন।
চিনের পর এবার হংকংয়ে হানা এইচএমপিভির! সতর্ক প্রতিবেশি দেশগুলিও
বিহারের এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনে, নীতিশ কুমার একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দেন, “যারা আমাদের আগে ক্ষমতায় ছিল, তারা কি কিছু করেছে? মানুষ সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বেরোতে ভয় পেত। আমি ভুলবশত (‘গলতী সে’) এক couple বার তাদের সঙ্গে জোট করেছিলাম।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি প্রকাশ্যে বলেন, তার অতীত রাজনৈতিক মিত্রদের প্রতি তাঁর নিরপেক্ষতা এবং সমালোচনা।
নীতিশ কুমারের এই অবস্থান অনেকেই আশা করেছিলেন যে, বিরোধী নেতা লালু যাদব যদি শান্তির প্রস্তাব দেন, তাহলে হয়তো আবার তাদের মধ্যে পুরোনো সম্পর্কের পুনরুজ্জীবন ঘটবে। তবে নীতিশ কুমার স্পষ্টভাবে জানান, তিনি আর সেই পথে ফিরে যেতে চান না। তাঁর এই মন্তব্য একদিকে যেমন বিহারের রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, তেমনই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা শুরু হয়েছে।
নীতিশ কুমার এবং লালু যাদবের রাজনৈতিক সম্পর্ক অতীতে বেশ জটিল ছিল। একসময় তারা একসাথে রাজনীতি করেছেন, কিন্তু বিভিন্ন কারণে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। মহাগঠবন্ধনে নীতিশ কুমারের নেতৃত্বে একসময়ে সাফল্য এসেছিল, তবে পরে নীতিশ কুমারের বিজেপির দিকে চলে যাওয়ার ফলে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে উঠেছিল।
কেউ টোটো চালক, কেউ শ্রমিক, গোপনে চলত জেএমবির কার্যকলাপ, গ্রেফতার বাংলাদেশি জঙ্গিরা
এদিকে, লালু যাদবের পক্ষ থেকে, বিহারে দলের ক্ষমতায় ফেরার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু নীতিশ কুমারের অবস্থান স্পষ্ট যে, তিনি আর সেই পুরনো জোটে ফিরবেন না, এমনকি শান্তির প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না।
নীতিশ কুমারের মন্তব্যে বিহারের রাজনীতিতে যে নতুন দিক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, তা হল বিজেপি এবং তাদের মিত্রদের প্রতি তাঁর আনুগত্য এবং সরকারের প্রতি তাঁর স্থিতিস্থাপকতা। এর ফলে ভবিষ্যতে বিহারের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে, যা জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্ব পাবে।
এভাবে, নীতিশ কুমারের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করেছে, যে তিনি রাজনৈতিক কৌশল এবং আপোষের পথ থেকে দূরে সরে গিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চান।
গঙ্গাসাগরকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা, দাবি গোয়েন্দাদের
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বিহারের রাজনীতি এখন এক নতুন মোড়ে পৌঁছেছে, যেখানে নীতিশ কুমারের জোটের সঙ্গী এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে সম্পর্কের পরবর্তী দিক নির্ধারণ করবে রাজ্যের ভবিষ্যত।