রেশনে চাল-গম নয়, দেওয়া হবে নগদ টাকা! কেন্দ্রের নয়া পরিকল্পনা

নরেন্দ্র মোদি সরকারের অধীনে রেশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা কি চলছে? ভবিষ্যতে কি রেশনের মাধ্যমে বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার পরিবর্তে সাধারণ জনগণের অ্যাকাউন্টে সরাসরি নগদ অর্থ…

Niti Aayog Sparks Speculation Over Centre’s Plan to Replace Rice and Wheat with Cash in Ration Distribution

short-samachar

নরেন্দ্র মোদি সরকারের অধীনে রেশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা কি চলছে? ভবিষ্যতে কি রেশনের মাধ্যমে বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার পরিবর্তে সাধারণ জনগণের অ্যাকাউন্টে সরাসরি নগদ অর্থ পাঠানোর দিকে হাঁটবে কেন্দ্র? এমন একটি প্রশ্ন সম্প্রতি উঠে এসেছে নীতি আয়োগের বৈঠকের পর। এই বিষয়ে নীতি আয়োগের পক্ষ থেকে রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুকে তলব করা হয়েছিল।

   

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিশ্বম্ভরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নীতি আয়োগের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ড. যোগেশ সুরি এবং আরও ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি টিম। বৈঠকে মূলত রেশন ডিলারদের দীর্ঘদিনের কমিশন বৃদ্ধির দাবির কথা আলোচনা হয়েছিল। এছাড়া, সুরি বিশ্বম্ভরকে প্রশ্ন করেন, “রেশন সামগ্রী নিয়ে সাধারণ মানুষের কোনও অভিযোগ আছে কি না?” পাশাপাশি, তিনি আরও জানতে চান, “যদি রেশন সামগ্রী সরবরাহের পরিবর্তে নগদ হস্তান্তর করা হয়, তাহলে সেটা কি উপযুক্ত হবে?”

বিশ্বম্ভর বসু জানান, “নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে রেশন সামগ্রী দেওয়া হলে সাধারণ মানুষকে খোলা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে হবে, এতে বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি কীভাবে কাজ করবে, সেটা আমার প্রশ্ন।” এই বিষয়ে নীতি আয়োগের তরফে তেমন কোনও সুনির্দিষ্ট উত্তর দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।

এদিকে, সোমবার রেশন ডিলারদের কমিশন বৃদ্ধির দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে গিয়ে দরবার করেছিলেন বিশ্বম্ভর। সেখানে, সংগঠনের পরামর্শদাতা এবং লোকসভার সাংসদ সৌগত রায়ের নেতৃত্বে একটি সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল ১৫ মিনিটের বৈঠক করেন, যেখানে অমিত শাহ তাঁদের দাবির বিষয়ে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।

পরবর্তী সময়ে, নীতি আয়োগের তরফে বিশ্বম্ভরকে তলব করা হয় এবং সেখানে আলোচনা করা হয়, “রেশন ডিলারদের আয় বৃদ্ধির জন্য কি উপভোক্তাদের কাছ থেকে কমিশন হিসেবে টাকা কেটে নেওয়া যেতে পারে?” প্রাথমিকভাবে উপভোক্তাদের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবে আপত্তি জানানো হলেও, বিশ্বম্ভর বিশ্বাস করেন যে, পরে তারা এতে সম্মত হতে পারেন।

এমনকি, মোদি সরকারের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম পছন্দের পদ্ধতি হয়ে দাঁড়িয়েছে সরাসরি নগদ হস্তান্তর। এই পদ্ধতিটি কৃষকনিধি স্কিমের মতো প্রকল্পে দৃশ্যমান। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ একাধিকবার বলেছেন, নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে ভুয়া উপভোক্তার সমস্যা এড়ানো সম্ভব এবং সরকারের খরচও বাঁচানো যায়। তবে বিরোধীরা এই নগদ হস্তান্তরের পদ্ধতিকে ভোটের আগে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে।

সুতরাং, রেশন ব্যবস্থা তুলে দিয়ে নগদ হস্তান্তরের প্রস্তাবটি এখনই সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি, তবে এটি ভবিষ্যতে দেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন আঙ্গিকে নিয়ে আসতে পারে।