মোদীর ‘দীপাবলি বোনাস’, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামে ছাড়ের পথে কেন্দ্র

স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চে লালকেল্লা থেকে এ বার সাধারণ মানুষের জন্য এক বড় সুখবর শোনালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Pm Modi) । আলোর উৎসব দীপাবলির আগেই কেন্দ্র…

Next-Generation GST Reforms Announced by PM Modi to Ease Prices and Boost Economy

স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চে লালকেল্লা থেকে এ বার সাধারণ মানুষের জন্য এক বড় সুখবর শোনালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Pm Modi) । আলোর উৎসব দীপাবলির আগেই কেন্দ্র আনতে চলেছে ‘নেক্সট জেনারেশন জিএসটি রিফর্ম’। মোদীর দাবি, এই নতুন কর সংস্কারের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেকটাই কমে যাবে, যা সরাসরি উপকার দেবে দেশের কোটি কোটি মানুষকে।

শুক্রবার সকালে ১৫ আগস্টের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী (Pm Modi) । সেই ভাষণে তিনি শুধু স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ ও দেশের উন্নয়ন যাত্রার কথা বলেননি, বরং বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কেও বিশদে জানান। অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “আট বছর পর সময়ের দাবি অনুযায়ী জিএসটি ব্যবস্থার একটি বড় রিভিউ প্রয়োজন। আমরা রাজ্যগুলির সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছি এবং একটি হাই পাওয়ার কমিটি তৈরি করেছি। এই কমিটি সমস্ত প্রস্তাব খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করেছে।”

   

প্রধানমন্ত্রী (Pm Modi) স্পষ্ট করে জানান, নেক্সট জেনারেশন জিএসটি রিফর্মের মূল উদ্দেশ্য হল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উপর করের বোঝা কমানো। তাঁর কথায়, “যে সমস্ত জিনিস সাধারণ মানুষ প্রতিদিন ব্যবহার করেন, সেগুলির দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সাধ্যের মধ্যে পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাই আমরা করতে চাইছি। নতুন সংস্কার কার্যকর হলে খাদ্যদ্রব্য, পোশাক, ওষুধ, রান্নার সামগ্রী-সহ বহু পণ্যের উপর জিএসটি হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমবে।”

এটি শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি এনে দেবে না, বরং বাজারে ক্রয়ক্ষমতাও বাড়াবে বলে কেন্দ্রের আশা। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই সিদ্ধান্ত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, কারণ কর কমলে পণ্যের উৎপাদন খরচ ও বিক্রয়মূল্য উভয়ই কমে যাবে। বিশেষত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার এই সুবিধা সবচেয়ে বেশি অনুভব করবে।

মোদী (Pm Modi) তাঁর বক্তৃতায় আরও জানান, “আমাদের লক্ষ্য কেবল কর কমানো নয়, বরং জিএসটি ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, সহজ এবং প্রযুক্তিনির্ভর করা। যাতে ব্যবসায়ী, ছোট দোকানদার, স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তা—সকলের জন্যই কর প্রদান প্রক্রিয়া ঝামেলাহীন হয়।” এজন্য নতুন সংস্কারে ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেম, দ্রুত রিফান্ড, এবং কম কাগজপত্রের মতো একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

Advertisements

রাজনৈতিক মহলে এই ঘোষণার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শাসক দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই পদক্ষেপ দেশের অর্থনীতিকে নতুন গতি দেবে এবং উৎসবের মরসুমে বাজারে চাঙ্গাভাব আনবে। বিরোধীরা অবশ্য বলছে, এই ঘোষণাটি নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ, এবং বাস্তবে এর প্রভাব দেখতে অপেক্ষা করতে হবে।

তবে জনসাধারণের মধ্যে খবরটি ইতিমধ্যেই আশার সঞ্চার করেছে। দীপাবলির আগে যখন উৎসবের কেনাকাটায় চাহিদা বেড়ে যায়, তখন যদি দাম কিছুটা হলেও কমে, তাহলে ক্রেতাদের মুখে হাসি ফোটানো সহজ হবে। ব্যবসায়ীরাও মনে করছেন, কর কমলে বিক্রিবাটা বাড়বে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সব মিলিয়ে, স্বাধীনতা দিবসের এই ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী একদিকে যেমন কর সংস্কারের নতুন দিশা দেখালেন, তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও দিলেন। এখন দেখার বিষয়, আগামী কয়েক মাসে ‘নেক্সট জেনারেশন জিএসটি রিফর্ম’ কীভাবে কার্যকর হয় এবং সত্যিই দীপাবলির আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কতটা কমে আসে।