করদাতাদের জন্য সুখবর, নয়া আয়কর বিলে মিলতে পারে এই সমস্ত সুবিধা

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ১৩ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার নতুন আয়কর বিল সংসদে পেশ করার পরিকল্পনা করেছে। এই বিলটি নরেন্দ্র মোদি সরকারের উদ্যোগে আয়কর আইনকে সহজ ও সাধারণ…

New Income Tax Bill to Be Tabled in Parliament on Thursday

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ১৩ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার নতুন আয়কর বিল সংসদে পেশ করার পরিকল্পনা করেছে। এই বিলটি নরেন্দ্র মোদি সরকারের উদ্যোগে আয়কর আইনকে সহজ ও সাধারণ মানুষের জন্য বোধগম্য করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

বর্তমানে যা আয়কর আইন ১৯৬০ অনুসরণ করা হচ্ছে, সেটি বেশ জটিল এবং অনেক সময় নাগরিকদের জন্য বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। এই আইন সংস্কার করে সহজতর করা হলে সাধারণ মানুষ ও করদাতারা উপকৃত হবেন, এমনটাই আশা করা হচ্ছে। এবার চলুন, নতুন আয়কর বিলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে জানি।

   

প্রথমত, নতুন আয়কর বিলে ‘আয়কর বছরে’ পদ্ধতির প্রবর্তন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে, বর্তমানে যে ‘অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার’ এবং ‘প্রিভিয়াস ইয়ার’ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে, তা দূর করা হবে। সাধারণত করদাতাদের জন্য এই টার্মগুলি বোঝা একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। নতুন পদ্ধতিতে এই বিভ্রান্তি শেষ হবে এবং একটিমাত্র ‘ট্যাক্স ইয়ার’ হিসাবে সবকিছু স্পষ্ট হবে। তবে, অর্থবর্ষের পরিবর্তন হবে না; অর্থাৎ, ১ এপ্রিল থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত একই সময়ে অর্থবর্ষ চলবে।

দ্বিতীয়ত, নতুন বিলে বেশ কিছু সেকশনের নম্বরে পরিবর্তন আসবে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, ‘আয়কর ট্যাক্স রিটার্ন ফাইলিং’ সেকশন ১৩৯-এ অন্তর্গত ছিল, তবে নতুন কাঠামোয় এটি ১১৫বিএসি সেকশনে স্থানান্তরিত হতে পারে। এই ধরনের পরিবর্তনগুলো আয়কর দাতাদের জন্য একটু বিভ্রান্তিকর হতে পারে, তবে এটি আইনকে সহজ ও সঙ্গতিপূর্ণ করতে করা হচ্ছে।

তৃতীয়ত, ‘রেসিডেন্সি ল’ সম্পর্কিত কোনো পরিবর্তন আসছে না। আগের মতোই এটি থাকবে এবং আইন অনুযায়ী একেকটি ব্যক্তির ট্যাক্স রেসিডেন্সি স্থিতি নির্ধারিত হবে।

চতুর্থত, বর্তমান আয়কর আইন ৫৩৬টি সেকশন এবং ১৬টি শিডিউল নিয়ে ৬০০ পাতার একটি বিশাল ‘মহাভারত’ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা সাধারণ মানুষের কাছে বোঝা কঠিন। নতুন আয়কর আইনে সেকশনের সংখ্যা কমিয়ে ২৯৮টি এবং শিডিউলের সংখ্যা কমিয়ে ১৪টি করা হয়েছে। এই পরিবর্তনটি আইনকে অনেক সহজ এবং সোজা করবে।

পঞ্চমত, আইনকে আরও সহজ করতে, আইটিআর ফাইলিং ডেডলাইন, ইনকাম ট্যাক্স স্ল্যাবস, এবং ক্যাপিটাল গেইনসের মধ্যে কোনো পরিবর্তন করা হবে না। এই দিকগুলো এখনও পূর্বের মতোই থাকবে।

ছয়ে, টিডিএস (ট্যাক্স ডেডাকটেড অ্যাট সোর্স) সংক্রান্ত যাবতীয় সেকশনগুলো একত্রিত করা হবে এবং একটি একক ক্লজে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই পদক্ষেপটি আয়কর ব্যবস্থাকে আরও সরলীকৃত করবে।

অবশেষে, আয়কর বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন আইনটি ১ এপ্রিল, ২০২৬ থেকে কার্যকর হতে পারে। এই সময়সীমা অনুসারে, করদাতারা নতুন আইন অনুযায়ী কর প্রদানে অভ্যস্ত হতে পারবেন।

এই সংস্কারগুলো পুরোপুরি কার্যকর হলে, মধ্যবিত্ত এবং সাধারণ মানুষের জন্য আয়কর আইনের বোঝা অনেক সহজ হয়ে যাবে। বিশেষ করে ১২ লক্ষ টাকার আয় পর্যন্ত কর ছাড় এবং নতুন আইনের সহজবোধ্যতা তাদের জন্য বিরাট স্বস্তি নিয়ে আসবে।