নিউদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু, রেলের গাফিলতির অভিযোগ বিরোধী শিবিরের

গতকাল নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে (Rahul Gandhi) ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। এই ঘটনা পুরো দেশকে শোকাহত করেছে, তবে এর…

new-delhi-railway-station-stampede-rahul-gandhi-slams-government-for-mishandling-the-incident

গতকাল নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে (Rahul Gandhi) ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। এই ঘটনা পুরো দেশকে শোকাহত করেছে, তবে এর সঙ্গে অনেক প্রশ্নও উঠেছে। রেল কর্তৃপক্ষ ঘটনার পর দাবি করেছে, ট্রেনের অতিরিক্ত ভিড় এবং গুজবের জেরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে বিরোধী দলগুলোর তরফ থেকে রেলের ব্যর্থতা এবং কেন্দ্র সরকারের অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলের দাবি, রেলের গাফিলতি এবং সিস্টেমের ব্যর্থতাই এই মারাত্মক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) এক্স (Twitter) হ্যান্ডেলে এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, “এই ঘটনা একবার again রেলের ব্যর্থতা এবং অসংবেদনশীলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। প্রয়াগরাজগামী পুণ্যার্থীরা যে ভিড় জমাবেন সেটা তো প্রত্যাশিতই ছিল। তাহলে রেলের তরফে আগে থেকে ব্যবস্থা করা হল না কেন? সরকার এবং প্রশাসন নিশ্চিতভাবে এ ঘটনা এড়াতে পারতো।” রাহুলের এই মন্তব্যের পর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আরও একটি দাবি তুলেছেন, “মোদি সরকার চেষ্টা করছে তথ্য চাপিয়ে রাখতে। দিল্লির ঘটনায় মৃত ও নিখোঁজদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা হোক।”

   

এদিকে, দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অতিশী বলছেন, “সরকার কুম্ভ মেলায় আসা যাত্রীদের নিয়ে ছেলেখেলা করছে। একদিকে যাত্রীদের ভিড় সামলানোর জন্য কোনও পরিকল্পনা নেই, অন্যদিকে বিভিন্ন রাজ্য থেকে যাত্রীদের যাওয়ার জন্য কোনো সুব্যবস্থা করা হয়নি।” এর মধ্যে, বহুজন সমাজ পার্টির (BSP) পক্ষ থেকেও এই ঘটনার জন্য রেল এবং কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।

এ প্রশ্ন উঠছে, এই দুর্ঘটনার জন্য কে দায়ী? কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো? রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে অতিরিক্ত ভিড় ছিল এবং গুজব ছড়িয়ে পড়ায় আরও বেশি চাপ পড়েছিল যাত্রীদের ওপর। কিন্তু বিরোধী দলের দাবি, এই ধরনের বিশাল আয়োজনের ক্ষেত্রে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। বিশেষ করে, প্রয়াগরাজগামী যাত্রীদের যে ভিড় থাকবেই, তা পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব ছিল। অথচ রেল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনো সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়নি।

ঘটনাটি আরও জটিল হয়েছে, কারণ প্রয়াগরাজ যাওয়ার জন্য ১৫০০ যাত্রী অসংরক্ষিত টিকিট কেটেছিলেন। রেলওয়ের কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছিল না। এত বড় সংখ্যক অসংরক্ষিত টিকিট বিক্রি হওয়ার পরও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এছাড়া, ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ঘোষণা শোনা গিয়েছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। এমনকি দুটি ট্রেনের সঠিক সময়ের ঘোষণাও করা হয়নি, যার ফলে আরও ভিড় জমে যায় এবং গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, কেন রেল কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই এই ব্যাপারে সতর্ক হয়নি? কেন এমন এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে দিল? এই দুর্ঘটনার পর সিস্টেমের ব্যর্থতা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে রেলও। বিশেষ করে, এত বিশাল পরিসরে নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থাপনার ঘাটতি স্পষ্ট হয়েছে।

একটি বড় প্রশ্ন উঠে আসছে—কবে রেল কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিস্টেমে কার্যকরী পরিবর্তন আনবে যাতে এই ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।