মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার হোয়াইট হাউসে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে “আশ্বাস” দিয়েছেন যে ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ট্রাম্পের দাবি, “আজ মোদী আমাকে বললেন তারা রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। এটা বড় পদক্ষেপ।”
কিন্তু বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লি সাফ জানায়, ভারত এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি৷ এই সিদ্ধান্ত নির্ভর করে শুধুমাত্র মার্কেট ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর৷ বিদেশমন্ত্রক (MEA) এর মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ভারত তেল ও গ্যাসের বড় আমদানিকারক। অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা। আমাদের আমদানি নীতি সম্পূর্ণরূপে এই লক্ষ্য অনুসারে পরিচালিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, ভারতের এনার্জি নীতি দুইটি মূল লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে৷ একটি, বাজার অনুযায়ী উৎসের বৈচিত্র্য আনা এবং দুই, স্থিতিশীল দাম ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করা।
ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এনার্জি সহযোগিতা
মুখপাত্র জানান, ভারত বহু বছর ধরে আমেরিকার কাছ থেকে জ্বালানি কেনা সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। গত দশ বছরে এই প্রচেষ্টা ধারাবাহিকভাবে এগিয়েছে। এই মুহূর্তে দু’দেশের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে চলছে আলোচনা।
গত মাসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত-নির্বাচিত সার্জিও গোর জানিয়েছেন, মার্কিন পক্ষ চাইছে ভারতীয় বাজারে তাদের ক্রুড, পেট্রোলিয়াম পণ্য ও LNG বিক্রির সুযোগ বাড়াতে। তিনি বলেছেন, “আমরা এই বাণিজ্য আলোচনায় ভারতীয় বাজার খুলতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সম্ভাবনার কোনও সীমা নেই।”
ট্রাম্প ও রাশিয়ান তেল New Delhi Denies Trump Russia Oil
ট্রাম্পের রাশিয়ান তেল নিয়ে অসন্তোষের কারণে গত কয়েক মাসে ভারতীয় পণ্যের শুল্ক ২৫% থেকে ৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্রাম্পসহ তার উপদেষ্টা পিটার নাভারো, হাওয়ার্ড লুটনিক বারবার ভারতের রাশিয়ান তেল ক্রয়কে সমালোচনা করেছেন।
তবে নয়া দিল্লি পুনর্ব্যক্ত করেছে, ভারত শুধুমাত্র বাজারের অফার এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী তেল ও গ্যাসের উৎস নির্ধারণ করে। এছাড়া, জাতীয় নিরাপত্তা ও কৌশলগত মূল্যায়নও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শুধু শুল্ক বা বাণিজ্যের বিষয় নয়, ভারতের লক্ষ্য ভোক্তাদের সাশ্রয়ী ও নিরাপদ এনার্জি সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং সেই নীতিই দেশের এনার্জি সিদ্ধান্তের মূল।