২০২৬ এর বিধানসভায় নয়া মুখ্যমন্ত্রীর মুখ শশীকলা

২০২৬ এ শুধু বাংলা নয় নির্বাচন তামিলনাডুতেও (Assembly Elections)। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্রাবিড় রাজ্যেও রাজনৈতিক চাপানউতোর কম নয়। অল ইন্ডিয়া আন্না দ্রাবিড় মুন্নেত্র কঝগম (AIDMK)…

Asssembly election

২০২৬ এ শুধু বাংলা নয় নির্বাচন তামিলনাডুতেও (Assembly Elections)। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্রাবিড় রাজ্যেও রাজনৈতিক চাপানউতোর কম নয়। অল ইন্ডিয়া আন্না দ্রাবিড় মুন্নেত্র কঝগম (AIDMK) দলের বর্ষীয়ান নেতা এবং বিধায়ক কে এ সেঙ্গোট্টাইয়ান দলের প্রাক্তন নেত্রী ভি কে শশীকলাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে প্রস্তাব করেছেন।

এই ঘোষণা দলের অভ্যন্তরীণ গতিশীলতায় একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। ২০২৬ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনের আগে এআইএডিএমকে-র নেতৃত্বের প্রশ্নে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে। সেঙ্গোট্টাইয়ানের এই পদক্ষেপ দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এডাপ্পাডি কে পালানিস্বামী (ইপিএস)-এর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একটি পরোক্ষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

   

২০২৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গোবিচেট্টিপালায়ামে এআইএডিএমকে-র কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সেঙ্গোট্টাইয়ান দলের ঐক্যের উপর জোর দিয়ে বলেন, “যারা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন বা দল ছেড়ে গেছেন, তাদের ক্ষমা করে আবার দলে ফিরিয়ে আনা উচিত।”

তিনি স্পষ্টভাবে শশীকলা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পান্নীরসেলভাম (ওপিএস) এবং টি টি ভি ধিনাকরণের নাম উল্লেখ না করলেও, তাঁর বক্তব্য স্পষ্টভাবে এই নেতাদের পুনর্বাসনের দিকে ইঙ্গিত করে। তিনি দলের বর্তমান নেতৃত্বকে ১০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য, অন্যথায় তিনি এবং তাঁর সমর্থকরা দলের ঐক্যের জন্য নিজেদের উদ্যোগে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

শশীকলা, যিনি প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন, ২০১৬ সালে জয়ললিতার মৃত্যুর পর এআইএডিএমকে-র সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে তিনি দলের বিধায়ক দলের নেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন এবং মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। কিন্তু সম্পত্তি সম্পর্কিত মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়, যার ফলে তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত হন।

২০২১ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে শশীকলা দলের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছেন এবং জয়ললিতার শাসনের মডেল পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সেঙ্গোট্টাইয়ানের সাম্প্রতিক বক্তব্য দলের অভ্যন্তরীণ বিভেদকে আরও স্পষ্ট করেছে। তিনি এর আগেও ইপিএস-এর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়েম্বাটুরে একটি কৃষক সমাবেশে অংশ না নিয়ে।

তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে, ইপিএস-কে সম্মান জানানোর জন্য আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এম জি রামচন্দ্রন (এমজিআর) এবং জয়ললিতার ছবি ব্যবহার করা হয়নি, যা তাঁর কাছে দলের ঐতিহ্যের প্রতি অসম্মান বলে মনে হয়েছিল।

Advertisements

তবে, সেঙ্গোট্টাইয়ান পরে ইপিএস-এর শাসনের প্রশংসা করে বিরোধ মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। এপ্রিল ২০২৫-এ তিনি বলেছিলেন, “এআইএডিএমকে সঠিক পথে রয়েছে এবং দলে কোনও সমস্যা নেই।” কিন্তু তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং সাসিকলার প্রতি সমর্থন ইঙ্গিত দেয় যে তিনি দলের বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট নন।

শশীকলার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিছু দলীয় নেতা মনে করেন, শশীকলার প্রত্যাবর্তন দলের ঐক্যকে শক্তিশালী করতে পারে এবং ২০২৬ সালের নির্বাচনে দ্রাবিড় মুন্নেত্র কঝগম (ডিএমকে)-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক হবে।

অন্যদিকে, ইপিএস এবং তাঁর সমর্থকরা শশীকলার প্রত্যাবর্তনের বিরোধিতা করে আসছেন। ইপিএস-এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বিধানসভায় দলের উপনেতা আর বি উধায়কুমার স্পষ্টভাবে বলেছেন, “সাসিকলার জন্য দলে কোনও স্থান নেই।”

সেঙ্গোট্টাইয়ানের এই উদ্যোগ তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তাঁর সমর্থকরা মনে করেন, শশীকলার অভিজ্ঞতা এবং জয়ললিতার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সহযোগিতা দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। তবে, ইপিএস-এর নেতৃত্বাধীন বর্তমান নেতৃত্ব এই প্রস্তাবকে কীভাবে গ্রহণ করবে, তা এখনও অস্পষ্ট।

চার আকর্ষণীয় রঙে TVS Ntorq 150 বাজার তোলপাড় করছে, কোনটি কেমন?

সেঙ্গোট্টাইয়ানের ১০ দিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর দলের ভবিষ্যৎ দিকটি আরও স্পষ্ট হবে।এই ঘটনা তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা এবং সম্ভাব্য শক্তি সংঘাতের ইঙ্গিত দেয়। এআইএডিএমকে-র অভ্যন্তরীণ বিভেদ এবং শশীকলার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সমীকরণকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।