বেঙ্গালুরুর (commissioner) এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) এর আইপিএল ২০২৫ বিজয় উৎসবের সময় ঘটে যাওয়া ভিড়ে পদপিষ্ট হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু এবং ৬৭ জনের আহত হওয়ার ঘটনার পর বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশের কমিশনার বি. দয়ানন্দকে সাসপেন্ড করা হয়। এই ঘটনার পর নতুন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সীমান্ত কুমার সিং।
শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বলেন, “এটি নিঃসন্দেহে একটি কঠিন পরিস্থিতি। তবে, আমার অগ্রাধিকার হবে মৌলিক পুলিশি কার্যক্রম। আমি আমার অফিসারদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করব এবং জনগণ, সংবাদমাধ্যম এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের মতামত বিবেচনা করব।
এর ভিত্তিতে আমরা একে একে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য অগ্রাধিকার নির্ধারণ করব(commissioner) । এই মুহূর্তে আমার শীর্ষ অগ্রাধিকার কী হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা অকাল। তবে, পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং, এবং আমার মূল লক্ষ্য হলো জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করা যে বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ আপনাদের জন্য আছে, সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে এবং এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করবে।”
এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে ৪ জুন ২০২৫-এ, যখন আরসিবি তাদের প্রথম আইপিএল শিরোপা জয়ের পর বেঙ্গালুরুতে ফিরে আসে। দলটি বিধান সৌধায় (commissioner) মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং পরে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে একটি উৎসব অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (কেএসসিএ) এবং ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তবে, পরিকল্পনার (commissioner) ত্রুটি এবং নিরাপত্তার ঘাটতির কারণে স্টেডিয়ামের বাইরে প্রায় ২-৩ লক্ষ মানুষ জড়ো হয়, যদিও এর ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৫,০০০। স্টেডিয়ামের গেট ৩ আংশিকভাবে খোলার সময় টিকিটধারী এবং টিকিটবিহীন ভক্তদের ভিড়ের চাপে ভয়াবহ ভিড়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্টেডিয়ামের কাছে একটি নর্দমার উপর অস্থায়ী স্ল্যাব ভেঙে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, যা এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
এই ঘটনার পর বেঙ্গালুরু পুলিশের (commissioner) বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া কমিশনার বি.দয়ানন্দ, কাবন পার্ক থানার ইন্সপেক্টর, স্টেশন হাউস অফিসার, জোনাল এসিপি, সেন্ট্রাল ডিসিপি এবং স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা এসিপি-কে সাসপেন্ড করেছেন। এছাড়াও, আরসিবির মার্কেটিং প্রধান নিখিল সোসালে এবং ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন ২০২৫) আরসিবি, কেএসসিএ এবং ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ১০৫ (হত্যার পরিমাণ না হওয়া দায়ী হত্যা), ১১৫ (স্বেচ্ছায় আঘাত), ১১৮ (বিপজ্জনক অস্ত্রে গুরুতর আঘাত), ১২১ (সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনে বাধা), ১৯০ (বেআইনি সমাবেশ), ১৩২ (আক্রমণ বা অপরাধমূলক শক্তি প্রয়োগ) এবং ১২৫(১২) (জীবন বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিপন্ন করার কাজ) ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়।
নতুন কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং, (commissioner) যিনি এর আগে কর্ণাটকের অতিরিক্ত পুলিশ মহানির্দেশক (এডিজিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, বলেন, “এই ঘটনা আমাদের জন্য একটি শিক্ষা। আমরা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছি, এবং এটি পুনরায় ঘটবে না।” তিনি জানান, তিনি প্রথমে তার দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করবেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি আরও বলেন, “(commissioner) আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখব এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করব।” মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ঘোষণা করেছেন যে, মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তিনি অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং অবসরপ্রাপ্ত হাইকোর্ট বিচারপতি জন মাইকেল ডি’কুনহার নেতৃত্বে একটি এক সদস্যের কমিশনকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
তবে, বিরোধী দল বিজেপি এবং জনতা দল (সেকুলার) এই ঘটনাকে “রাষ্ট্র-প্রায়োজিত হত্যা” বলে অভিহিত করে মুখ্যমন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমারের পদত্যাগ দাবি করেছে। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্রা বলেন, “সরকারের অব্যবস্থাপনা এবং কৃতিত্ব নেওয়ার প্রতিযোগিতা এই বিপর্যয়ের কারণ।”
টাকা গেল কোথায়? মিড ডে মিল নিয়ে কেন্দ্রীয় রিপোর্টে কাঠগড়ায় বাংলা
কর্ণাটক হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে (commissioner) এই ঘটনার মামলা গ্রহণ করেছে এবং সরকারকে ১০ জুনের মধ্যে একটি স্থিতি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে #ArrestKohli ট্রেন্ড ভাইরাল হয়েছে, যদিও অনেকে বলছেন, ভিরাট কোহলি এই ইভেন্টের আয়োজক বা নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নন। তবে, কোহলি এবং তার স্ত্রী অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা শোক প্রকাশ করেছেন। কোহলি বলেন, “আমি এই ঘটনায় মর্মাহত এবং শোকে বিহ্বল।”
নতুন কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং জানান, তিনি ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করবেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধে ড্রোন নজরদারি এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, “বেঙ্গালুরু একটি বিশ্বমানের শহর, এবং আমরা নিশ্চিত করব যে এখানকার জনগণ নিরাপদে বসবাস করতে পারে।”
এই ঘটনা বেঙ্গালুরুর (commissioner) ইতিহাসে একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তদন্তের ফলাফল এবং দায়ীদের শাস্তি নিয়ে জনগণের দৃষ্টি এখন সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনের উপর। এই ঘটনা ভারতীয় ক্রিকেটে জনসাধারণের উৎসবের নিরাপত্তা এবং পরিকল্পনার গুরুত্ব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।