HomeBharatনতুন ১০০ টাকার নোটে ছড়াল ভারত-নেপাল সীমান্ত বিতর্কের আগুন

নতুন ১০০ টাকার নোটে ছড়াল ভারত-নেপাল সীমান্ত বিতর্কের আগুন

- Advertisement -

কাঠমান্ডু, ২৮ নভেম্বর: নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক (এনআরবি) এক নতুন ১০০ টাকার নোট জারি করেছে, যা ভারত-নেপাল সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এই নোটে নেপালের সংশোধিত জাতীয় মানচিত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরা যেসব অঞ্চল ভারত উত্তরাখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে নেপালের ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় (এমইএ) এটাকে ‘একতরফা কাজ’ এবং ‘কৃত্রিম সম্প্রসারণ’ বলে খারিজ করে দিয়েছে, যা ২০২০ সালের মানচিত্র বিতর্কের স্মৃতি জাগিয়ে তুলেছে। নোটটিতে সাবেক গভর্নর মহাপ্রসাদ অধিকারীর স্বাক্ষর রয়েছে এবং জারির তারিখ ২০৮১ বিপি (২০২৪ খ্রিস্টাব্দ)। এই ঘটনা দুই প্রতিবেশী দেশের ‘রুটি-বেটি’ সম্পর্ককে যাচাই করছে, যেখানে সীমান্তের ছায়া সবসময়ই লুকিয়ে থাকে।নোটটির ডিজাইনটি ২০২৪ সালের মে মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়।

   

ইউনূসের সঙ্গে আল কায়েদা যোগের দাবি বাংলাদেশ ম্যাগাজিনের

চীনের স্টেট-অনুষ্ঠান চায়না ব্যাঙ্কনোট প্রিন্টিং অ্যান্ড মিন্টিং কর্পোরেশন দ্বারা ছাপানো এই নোটের খরচ প্রায় ৮.৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যাতে ৩০ কোটি নোট অন্তর্ভুক্ত। নোটে মাউন্ট এভারেস্ট, অশোক স্তম্ভ, মায়াদেবীর শিল্পকর্ম এবং একশৃঙ্গী গণ্ডারের ছবি রয়েছে, সাথে উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যেমন মাইক্রোপ্রিন্টিং এবং ওভারহোল ইমেজ। এনআরবির একজন মুখপাত্র বলেছেন, “এটি সরকারের নির্দেশ অনুসারে আপডেট করা হয়েছে, যা পুরনো নোটেও ছিল।” কিন্তু ভারতের কাছে এটি কোনো ছোটখাটো ব্যাপার নয় এটি সীমান্তের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করে।

এই বিতর্কের মূল রয়েছে ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি, যা নেপালের পশ্চিম সীমান্ত কালি নদীকে নির্ধারণ করেছিল। ভারতের মতে, নদীর উৎস কালাপানি গ্রামে, যা উত্তরাখণ্ডের পীথোরাগড় জেলার অংশ। নেপাল বলে, উৎস লিম্পিয়াধুরায়, যা মহাকালি নদীর উৎপত্তিস্থল এবং তাদের ধারচুলা জেলার অধীনে। লিপুলেখ পাস, যা কৈলাস-মানসরোবর তীর্থযাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ১৯৫৪ সাল থেকে ভারত-চীন বাণিজ্যের পথ, এখানেও দাবি।

এই তিনটি অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় ৩৭০ বর্গকিলোমিটার এলাকা, যা হিমালয়ের কোলে অবস্থিত। ২০২০ সালে ওলির সরকার সংবিধান সংশোধন করে এই মানচিত্র অন্তর্ভুক্ত করে, যার বিরুদ্ধে ভারত প্রতিবাদ করে বলেছিল, “এটি ঐতিহাসিক সত্যতা বা প্রমাণের উপর ভিত্তি করে নয়।”ভারতের বিরোধিতা তীব্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেছেন, “এই একতরফা সিদ্ধান্ত ভূমিকার বাস্তবতা পরিবর্তন করবে না। কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরা ভারতের অংশ।”

এমইএ জানিয়েছে, লিপুলেখের মাধ্যমে বাণিজ্য দশকের পর দশক ধরে চলছে, এবং নেপালের দাবি ‘অযৌক্তিক’। সাবেক কূটনীতিবিদ কে.পি. ফেবিয়ান বলেছেন, “এটি অযথা এবং অপ্রয়োজনীয়। নেপালকে কূটনৈতিকভাবে আলোচনায় নামতে হবে, নোটে মানচিত্র আঁকলে হবে না।” কংগ্রেস নেতা পাওয়ান খেরা বলেছেন, “এটি চাঞ্চল্যকর, সরকারের প্রতিক্রিয়া কোথায়?” বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীনের প্রিন্টিং কোম্পানির জড়িত থাকা এই বিতর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে, কারণ ভারতীয় প্রেস এমন মানচিত্র ছাপতে পারে না।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular