পূর্ব তীরবর্তী কোস্ট গার্ড কমান্ডার (navy-chief) এবং এডিজি ডনি মাইকেল বৃহস্পতিবার, ৭-৮ মে, পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় অবস্থিত ভারতীয় কোস্ট গার্ড জেলা সদর দপ্তর (ডিস্ট্রিক্ট হেডকোয়ার্টার্স, পশ্চিমবঙ্গ) পরিদর্শন করেন। এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল হলদিয়ার কমান্ডের অধীনে থাকা সম্পদের অপারেশনাল প্রস্তুতি এবং তৎপরতা পর্যালোচনা করা।
সফরের বিবরণ
ডনি মাইকেল (navy-chief), যিনি ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পূর্ব তীরবর্তী কোস্ট গার্ড কমান্ডার (navy-chief)হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এই সফরে হলদিয়ায় কোস্ট গার্ডের অপারেশনাল প্রস্তুতি, মূল পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি, অপারেশনাল রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধার প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার পর্যালোচনা করেন।
তিনি অফিসার এবং এনলিস্টেড পার্সোনেল (ইপি)-এর সঙ্গে একটি ইন্টারেক্টিভ সেশন পরিচালনা করেন, যেখানে তিনি কর্মীদের উৎসাহিত করে উৎসর্গ, অধ্যবসায় এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য প্রেরণা দেন। এছাড়াও, কর্মীদের মধ্যে শারীরিক সুস্থতা এবং সৌহার্দ্য বাড়াতে একটি উৎসাহব্যঞ্জক “জোশ রান” আয়োজন করা হয়।
এই সফরে তিনি হলদিয়ায় অবস্থিত কোস্ট গার্ড ইউনিটগুলোর অপারেশনাল কার্যক্রমের তৎপরতা পরীক্ষা করেন। তিনি কোস্ট গার্ডের জাহাজ, নৌযান এবং অন্যান্য সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করেন, যা সমুদ্রতীরবর্তী নিরাপত্তা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার (এসএআর) কার্যক্রম এবং সামুদ্রিক আইন প্রয়োগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করে নিশ্চিত করেন যে এগুলো ভারতীয় কোস্ট গার্ডের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক হচ্ছে।
ডনি মাইকেলের পটভূমি (navy-chief)
ডনি মাইকেল (navy-chief) ১৯৯০ সালের জুলাই থেকে ভারতীয় কোস্ট গার্ডে সেবা দিয়ে আসছেন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি বিভিন্ন শ্রেণির কোস্ট গার্ড জাহাজের কমান্ড করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, ফাস্ট প্যাট্রোল ভেসেল, অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল, পলিউশন কন্ট্রোল ভেসেল (পিসিভি) এবং অ্যাডভান্সড অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল। তিনি ২০২৩ সালের নভেম্বরে কোস্ট গার্ড রিজিয়ন (ইস্ট) এর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তার নেতৃত্বে পূর্বাঞ্চলীয় কোস্ট গার্ড একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চেন্নাই ও তুতিকোরিনে বড় আকারের বন্যা পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এননোরে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় তামিলনাড়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয়, অবৈধ অভিবাসন রোধ এবং ভারত-শ্রীলঙ্কা সামুদ্রিক সীমান্তে মাদকদ্রব্যসহ নিষিদ্ধ পণ্য বাজেয়াপ্ত ।
২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান এবং পূর্ব তীরবর্তী কোস্ট গার্ড কমান্ডার হিসেবে বিশাখাপত্তনমে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা কোস্ট গার্ড রিজিয়ন (নর্থ ইস্ট) এবং অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি কোস্ট গার্ড রিজিয়ন (ইস্ট)-এর প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে পূর্ব তীরবর্তী কোস্ট গার্ড ইউনিটগুলোর অপারেশন তদারকি, অবকাঠামো উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, নীতি প্রণয়ন এবং কর্মীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রম।
হলদিয়ায় কোস্ট গার্ডের ভূমিকা
হলদিয়ায় অবস্থিত কোস্ট গার্ড জেলা সদর দপ্তর (নং ৮, পশ্চিমবঙ্গ) পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় নিরাপত্তা এবং সামুদ্রিক আইন প্রয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ইউনিট কোস্ট গার্ড রিজিয়ন (নর্থ ইস্ট)-এর অধীনে কাজ করে, যা কলকাতায় অবস্থিত।
হলদিয়া কোস্ট গার্ড স্টেশন সমুদ্রতীরবর্তী নজরদারি, অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম এবং অবৈধ কার্যকলাপ যেমন চোরাচালান ও অভিবাসন রোধে সক্রিয়। এই স্টেশনে রয়েছে আইসিজিএস আমৃত কৌরের মতো জাহাজ, যা হলদিয়ায় মোতায়েন রয়েছে।
ভারতীয় মহিলা দল উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচের জন্য প্রস্তুত
ইন্টারেক্টিভ সেশন ও জোশ রান
ইন্টারেক্টিভ সেশনের সময় মাইকেল কর্মীদের সঙ্গে তাদের চ্যালেঞ্জ, অর্জন এবং পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি কোস্ট গার্ডের (navy-chief) মূল মূল্যবোধ—নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব এবং দলগত কাজের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “আপনাদের প্রতিটি পদক্ষেপ ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত।” জোশ রানের মাধ্যমে তিনি কর্মীদের মধ্যে শারীরিক সুস্থতা এবং দলগত ঐক্যের চেতনা জাগিয়ে তোলেন। এই ইভেন্টটি কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও প্রেরণা সৃষ্টি করে।
ভারতীয় কোস্ট গার্ডের প্রেক্ষাপট
ভারতীয় কোস্ট গার্ড (আইসিজি) ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সামুদ্রিক আইন প্রয়োগকারী এবং অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থা, যা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে (navy-chief)। এটি ভারতের আঞ্চলিক জলসীমা, সংলগ্ন অঞ্চল এবং একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। কোস্ট গার্ড পূর্ব ও পশ্চিম তীরবর্তী অঞ্চলে বিভক্ত, যেখানে পূর্ব তীরবর্তী কমান্ডার পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির উপকূলীয় নিরাপত্তার তদারকি করেন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডনি মাইকেলের হলদিয়া সফর ভারতীয় কোস্ট গার্ডের অপারেশনাল তৎপরতা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। তার নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের নিরাপত্তা ও সামুদ্রিক আইন প্রয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জোশ রান এবং ইন্টারেক্টিভ সেশনের মতো উদ্যোগ কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও ঐক্য সৃষ্টি করেছে। ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোস্ট গার্ডের এই প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।