মোদীর জন্মদিনে শুরু হল দেশের বৃহত্তম বস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার তার ৭৫তম জন্মদিনের দিনেই মধ্যপ্রদেশের ধর জেলায় দেশের প্রথম “প্রধানমন্ত্রী মেগা ইন্টিগ্রেটেড টেক্সটাইল রিজিয়ন অ্যান্ড অ্যাপারেল” (পিএম মিত্রা) পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন…

Narendra Modi PM Mitra Park inauguration

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার তার ৭৫তম জন্মদিনের দিনেই মধ্যপ্রদেশের ধর জেলায় দেশের প্রথম “প্রধানমন্ত্রী মেগা ইন্টিগ্রেটেড টেক্সটাইল রিজিয়ন অ্যান্ড অ্যাপারেল” (পিএম মিত্রা) পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন। একই সঙ্গে তিনি ‘সুস্থ নারী, শক্তিশালী পরিবার’ এবং অষ্টম ‘রাষ্ট্রীয় পুষ্টি মাস’ অভিযানের সূচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদী এর আগে ২০২২ সালেও জন্মদিনে মধ্যপ্রদেশ সফর করেছিলেন। এদিন ধর জেলার জনসভায় অংশ নিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন।

   

পিএম মিত্রা প্রকল্পের লক্ষ্য

কেন্দ্রীয় সরকারের পিএম মিত্রা প্রকল্পের লক্ষ্য হল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশ্বমানের অবকাঠামো সমৃদ্ধ বৃহৎ টেক্সটাইল উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা। এর আওতায় মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে সাতটি পার্ক তৈরি হচ্ছে।

ধর জেলার ভেঁইসোলা গ্রামে প্রায় ২,১৫৮ একর জমির উপর গড়ে উঠছে দেশের প্রথম পিএম মিত্রা পার্ক। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই পার্কে তুলো চাষিদের বিশেষ উপকার হবে এবং এটি দেশের বস্ত্রশিল্পে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। পার্কে বিশ্বমানের সুবিধা তৈরি করা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রতিদিন ২০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন সাধারণ বর্জ্য শোধনাগার (কমন এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট), ১০ এমভিএ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র, নিরবচ্ছিন্ন জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, আধুনিক সড়ক ব্যবস্থা এবং ৮১টি ‘প্লাগ-অ্যান্ড-প্লে’ ইউনিট।

পূর্ণাঙ্গ শিল্পনগরী

এছাড়া শ্রমিক ও মহিলা কর্মীদের জন্য আবাসন ও সামাজিক সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে, যাতে পুরো পার্কটি কেবল শিল্পাঞ্চল নয়, একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্পনগরীতে রূপ নেয়। ইতিমধ্যেই দেশের শীর্ষস্থানীয় টেক্সটাইল কোম্পানিগুলি পিএম মিত্রা পার্কে আস্থা দেখিয়েছে এবং ২৩,১৪৬ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে।

অন্যদিকে, এদিন প্রধানমন্ত্রী ‘সুস্থ নারী, শক্তিশালী পরিবার’ অভিযানেরও সূচনা করেন। এই কর্মসূচি আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির (স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র) গুলিতে। নারীর স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, লিঙ্গ সমতা, কিশোরী মেয়েদের রক্তাল্পতা নিয়ন্ত্রণ এবং সক্রিয় জীবনযাপনের প্রচার এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।

Advertisements

জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের (এনএইচএম) মধ্যপ্রদেশের পরিচালক ডা. সলোনি সিদানা বলেন, “নারীরা সাধারণত নিজের স্বাস্থ্যকে অবহেলা করেন, অন্যদের দেখভাল করতে গিয়ে। পুরুষদের সহযোগিতা প্রয়োজন এবং নারীদের উচিত প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা নিজের জন্য সময় রাখা।”

পিসিওএস) সমস্যা

এনএইচএম–এর তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যুরোর (আইইসি) পরিচালক ডা. রচনা দুবে জানান, বহু কিশোরীই না জেনেই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস) সমস্যায় ভোগে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁদের স্ক্রিনিং ও চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে।

একই দিনে শুরু হয় অষ্টম ‘রাষ্ট্রীয় পুষ্টি মাস’। এ বছর এর মূল লক্ষ্য হল চিনি ও ভোজ্য তেলের সীমিত ব্যবহার, শৈশবকালীন যত্ন ও শিক্ষা, এবং স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন পুষ্টিকর খাদ্যের প্রসার।

এভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্মদিনে শুরু হওয়া এই প্রকল্প ও অভিযানগুলি শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, দেশের বস্ত্রশিল্প, কৃষি, নারী স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় রচনা করবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।