রাজীব কুমারের মেয়াদ শেষ, রাহুলের অপেক্ষা না করেই সিদ্ধান্ত নিলেন মোদী

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ পদ, অর্থাৎ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের (CEC) নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি এক নতুন রাজনৈতিক নাটক উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের…

Narendra Modi Makes Decision to Appoint New Chief Election Commissioner

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ পদ, অর্থাৎ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের (CEC) নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি এক নতুন রাজনৈতিক নাটক উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশের নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে এই বৈঠক ও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধী দল, বিশেষত কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের মেয়াদ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হতে যাচ্ছে, এবং তার জায়গায় নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে, নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগকে কেন্দ্র করে নানা রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে।

   

গত সোমবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং কিছু মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ স্থগিত করার দাবি জানান। তিনি মনে করেন, সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা বিচারাধীন থাকায়, এই সময়েই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া কৌশলে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করবে।

২০২৩ সালে প্রণীত নতুন আইনের কারণে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়া কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। আগের নিয়ম অনুসারে, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটিতে প্রধান বিচারপতি থাকতেন, তবে নতুন আইন অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির বদলে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিরোধী দলের অভিযোগ, এতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা ব্যাহত হতে পারে, কারণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সরকারের পক্ষ থেকে কাজ করেন এবং তাদের রাজনৈতিক চাপের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

নির্বাচন কমিশন নিয়োগের প্রক্রিয়া এখন তিনজন সদস্যের কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়: প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায়, বিরোধী দল মনে করছে, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত ছিল।

এখন, দেশের আগামী মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সম্ভাব্য নাম হিসেবে জ্ঞানেশ কুমারের নাম সামনে এসেছে। তিনি রাজীব কুমারের উত্তরসূরি হতে পারেন, যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। তবে, এই নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিতর্ক এবং আইনি সমস্যা আগের মতোই তীব্র হয়ে উঠেছে।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ নিয়ে চলমান রাজনৈতিক নাটক ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। যদিও সরকার পক্ষ এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সংবিধানিক এবং আইনি বলয়ের মধ্যে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, বিরোধী পক্ষ এর বিরোধিতা করে আসছে। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ কী হবে, সেটাই ভবিষ্যতের দিকে অনেক কিছু নির্ধারণ করবে।