‘আত্মনির্ভর ভারত’, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’। কান পাতলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi), কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির ছোট -বড় নেতাদের মুখে এসব কথা শোনা যায়। এসব প্রকল্পে সাফল্যের রিপোর্টও বের করে বিভিন্ন মন্ত্রক। কিন্তু ভারত কি সত্যিই আত্মনির্ভর হয়েছে? সত্যিই কি দেশের মাটিতে তৈরি হচ্ছে প্রয়োজনীয় সব জিনিস।
উত্তরটা হল ‘না’। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল খোদ মেট্রো রেল। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ সহ দেশের প্রায় সমস্ত বড় শহরে মেট্রো চলে। আর দেশের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো মেট্রো হল কলকাতা মেট্রো। আর এই কলকাতা মেট্রোরই রেক চিন থেকে নিয়ে আসছে রেল মন্ত্রক বা বলা ভালো চিনের বিরুদ্ধে বড় বড় ‘ভাষণ’ দেওয়া মোদী সরকার।
পুরনো রেক নিয়ে নাজেহাল অবস্থা ছিল কলকাতা মেট্রো রেলের। কখনও যান্ত্রিক গোলযোগ, কখনও আগুন ধরে যাওয়া, কখন দরজা খোলা-বন্ধে সমস্যা প্রভৃতি নানা সমস্যা নিয়ে জেরবার ছিল মেট্রো রেল। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিন থেকে কলকাতায় আনা হয় ডালিয়ান রেক। কয়েক বছর ধরেই এই রেক চিন থেকে জাহাজপথে কলকাতায় আসছে।
লন্ডনের ‘রেড-সিগন্যালে’ হাসিনাকে নিয়ে ‘হাঁসফাঁস’ অবস্থা মোদীর?
চলতি বছর মে মাসে শেষেও দুটি রেক চিন থেকে কলকাতায় এসেছে। চিনের সিএনআর ডালিয়ান লোকোমোটিভ অ্যান্ড রোলিং স্টক কোম্পানি এই রেকগুলি তৈরি করেছে। ২০১৫ সালের মে মাসে কলকাতা মেট্রোর জন্য ১৪টি রেক তৈরির জন্য রেলওয়ে বোর্ড প্রথম চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল এই কোম্পানির সঙ্গে। রেকগুলি ২০১৮ সালের অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহ করার কথা ছিল।
কিন্তু সেন্ট্রাল রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশনের (আরডিএসও) নকশা অনুমোদনের ফলে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হয় বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। কলকাতা মেট্রোর একমাত্র রেক সরবরাহকারী ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির একচেটিয়া আধিপত্য ভেঙে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ ১৪টি রেকের প্রথমটি কলকাতা বন্দরে এসে পৌঁছায়।
কিন্তু চার বছর পর ২০২৩ সালের মার্চে এটি যাত্রী পরিবহণের কাজে যোগ দেয়। তারপর থেকে ধাপে ধাপে বেশ কয়েকতি ডালিয়ান রেক ব্লু লাইনে (দক্ষিণেশ্বর-নিউ গড়িয়া) রুটে নামানো হয়। সর্বশেষ ডালিয়ান রেকটি ৫ জুলাই যাত্রী পরিবহণ শুরু করেছে। বর্তমানে চালু এসি রেকের তুলনায় এই ধরণের রেকে ১০০ মিমি প্রশস্ত দরজা রয়েছে।
ভারতে থাকতে পারবেন ‘দেশত্যাগী’ হাসিনা? কী বলছে দিল্লি-ঢাকা বন্দি বিনিময় নীতি
এই রেকগুলির প্রশস্ত দরজা ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের সহজে প্রবেশ এবং প্রস্থান সহজতর করবে। ঝাঁকুনিও আগের চেয়ে কম হবে। কোচের ভেতরে সিসিটিভি কভারেজ, মডিউলার এবং প্রশস্ত ভেস্টিবিউল, প্রবীণ নাগরিক এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য আরও আসনের ব্যবস্থা সহ বর্ধিত আসন এই রেকগুলির কয়েকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।