মুসলিমদের ওয়াকফের ‘অন্তহীন ক্ষমতা’ শেষ করতে বিল পেশ মোদীদের?

এবার ওয়াকফ বোর্ডের জমি দখলের অন্তহীন ক্ষমতা রুখতে উদ্যোগী হল মোদী সরকার (Narendra Modi)। সপ্তাহের শুরুতেই এই সংক্রান্ত নতুন বিল সংসদে পেশ করা হতে পারে…

Photo or illustration of Narendra Modi, the Prime Minister of India, with a caption or headline suggesting his intention or proposal to reform or amend the Waqf laws or regulations, conveying a sense of potential change or policy update.

এবার ওয়াকফ বোর্ডের জমি দখলের অন্তহীন ক্ষমতা রুখতে উদ্যোগী হল মোদী সরকার (Narendra Modi)। সপ্তাহের শুরুতেই এই সংক্রান্ত নতুন বিল সংসদে পেশ করা হতে পারে (Narendra Modi)। যার ফলে ওয়াকফ বোর্ডের দখল করে নেওয়ার অগুনতি সম্পত্তির মালিকদের আবারও জমি ফেরত পাওয়ার একটা আশা দেখা দিয়েছে (Narendra Modi)।

দীর্ঘদিন ধরেই ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে ওয়াকফ আইনের মত ধর্মীয় আইনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। মজার বিষয় হল, মুসলিম প্রধান অনেক দেশেই অস্তিত্ব নেই। তুরস্ক লিবিয়া মিশর সুদান লেবানন সিরিয়া এমনকী ইরাকের মতো মুসলিম দেশগুলোতেও ওয়াকফ বোর্ড বা ওয়াকফ আইন নেই। সেখানে ভারতবর্ষে শুধু ওয়াকফ বোর্ডের অস্তিত্বই নয়, বছরের পর বছর ধরে তাদের ক্ষমতা এবং কার্যত মর্জিমাফিক জমি অধিগ্রহণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।

   

তীব্র হচ্ছে ইরান-ইজরায়েল সংঘাত! মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে যুদ্ধের আশঙ্কা

ভারতীয় সেনা এবং রেলের পর সব থেকে বেশি অধিকৃত জমি রয়েছে ভারতীয় ওয়াকফ বোর্ডের দখলে। ওয়াকফের দখলে থাকা জমির পরিমাণ হিসেব করলে অর্ধেক পাঞ্জাবেরও বেশি আয়তনের জমি তাদের দখলেই রয়েছে। ২০২৪ সাল অবধি প্রায় ৯ লক্ষ একরেরও বেশি জমি দখলে এসেছে ওয়াকফ বোর্ডের। আর এর পিছনে রয়েছে ১৯৫৪ সালে সংসদে পাস হওয়া ওয়াকফ আইন। ১৯৯৫ এবং ২০১৩ সালে আরও সংস্করণের পর যা কার্যত একপেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছে ভারতীয় ওয়াকফ বোর্ডকে।

এই আইন অনুযায়ী, ওয়াকফ যদি মনে করে কোনও জমি একজন মুসলমানের, সেক্ষেত্রে সেটি ওয়াকফের সম্পত্তি হতেই পারে। এক্ষেত্রে জমি অধিকারের জন্য শুধু ওয়াকফের এই ‘মনে’ করাটাই যথেষ্ট। কোনও তথ্য প্রমাণ বা নথির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু জমির মালিক ওয়াকফকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যেতে পারবে না। এই সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিকরণের জন্য বিশেষ ওয়াকফ ট্রাবুইনাল আদালতেই অ্যাপিল করতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে এইসব মামলার রায় ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষে গিয়েছে।

স্বাধীনতার সময়কালে অনেক মুসলিম ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। ভারতে তাদের থেকে যাওয়ার সম্পত্তি মুসলিমদেরই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহারের জন্য ১৯৫৪ সালে প্রথম পাশ হয় এই ওয়াকফ আইন। ১৯৯৫ এবং ২০১৩ সালে যা পরিবর্তন এবং পরিমার্জনের মাধ্যমে কার্যত একচেটিয়া ক্ষমতা পেয়ে যায় ওয়াকফ বোর্ড।

শোনা যায় ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৎকালীন কংগ্রেস সরকার এই আইনটি ব্যবহার করে দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডকে দিল্লির বুকে ১২৩টি সম্পত্তি দখলে রাখার সুযোগ করে দিয়েছিল। বর্তমানের বাজারদরের ভিত্তিতে যে সম্পত্তির মূল্য অসীম বলেই দাবি করা হচ্ছে। এমনকী ২১-২২ সালের তামিলনাড়ুর ৬টি গ্রাম কে ওয়াকাপ বোর্ড তাদের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করে। মজার বিষয় যার মধ্যে একটি দেড় হাজার বছরের পুরনো হিন্দু মন্দিরও আছে বলে অভিযোগ করছে।

‘সরকার গদি ছাড়’ দাবিতে অশান্ত বাংলাদেশ, জরুরি নিরাপত্তা বৈঠকে শেখ হাসিনা

গত শুক্রবারই এই নিয়ে একটি ক্যাবিনেট মিটিং ডাকা হয়েছিল। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে যে নতুন প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী ওয়াকফ বোর্ডের দাবি করা সম্পত্তিগুলির দাবির বৈধতা নিয়ে ভেরিফিকেশন করতেই হবে এবার থেকে। এমনকি অতীতে যে সমস্ত সম্পত্তি গুলি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলিও এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার মধ্যে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের বহু আগে থেকেই এই ব্যাপারে সলতে পাকানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। কার্যত সেই সময়ই এই নতুন বিলের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে ফেলেছিল তৎকালীন বিজেপি সরকার। সবমিলিয়ে ১৯৫৪ সাল থেকে শুরু হওয়া ভারতীয় ওয়াকফ বোর্ডের অন্তহীন ক্ষমতা যাত্রায় এবার ছেদ পড়তে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।