নাগপুর (Nagpur Kolkata Flight)থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে উড়ে যাওয়া একটি যাত্রীবাহী বিমান একটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। বিমানটি আকাশে ওড়ার সময় একটি পাখির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। যার কারণে বিমানটি জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয় নাগপুর বিমানবন্দরে। এই ঘটনায় বিমানের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, পাইলটের তৎপরতা এবং দক্ষতার কারণে একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
বিমানে থাকা ২৭২ জন যাত্রী সকলেই নিরাপদে রয়েছেন, এবং এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, বিমানটি নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল।
টেক অফের কিছুক্ষণ পরেই, বিমানটি আকাশে ওড়ার সময় একটি পাখির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এই সংঘর্ষের ফলে বিমানের সামনের অংশ, বিশেষ করে নাকের অংশ, যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাখির ধাক্কার কারণে বিমানের ইঞ্জিন বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশে সমস্যা হলে একটা বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারত।
তবে, বিমানের পাইলট এবং ক্রু সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।পাইলটের দ্রুত সিদ্ধান্ত এবং দক্ষতার কারণে বিমানটি নিরাপদে নাগপুর বিমানবন্দরে ফিরে আসে। জরুরি অবতরণের সময় বিমানবন্দরে ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম এবং জরুরি উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত ছিল। অবতরণের পর যাত্রীদের নিরাপদে বিমান থেকে নামানো হয় এবং তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
সৌভাগ্যবশত, কোনো যাত্রীর আঘাত বা স্বাস্থ্য সমস্যার খবর পাওয়া যায়নি। বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, যাত্রীদের জন্য বিকল্প ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কলকাতায় পৌঁছাতে পারেন।পাখির ধাক্কার কারণে বিমানে ক্ষতি হওয়ার ঘটনা বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে একটি পরিচিত সমস্যা।
এই ধরনের ঘটনা, যা ‘বার্ড স্ট্রাইক’ নামে পরিচিত, বিশেষ করে টেক অফ এবং অবতরণের সময় বেশি ঘটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে বিমানের ইঞ্জিন, উইন্ডশিল্ড বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা বিমানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তবে, আধুনিক বিমানগুলি এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, এবং পাইলটরা এই ধরনের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, ঘটনার পর বিমানটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিমান সংস্থা এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে পাখির ধাক্কার সঠিক কারণ এবং বিমানের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।
বিমানবন্দরের আশেপাশে পাখির উপস্থিতি কমাতে বিভিন্ন প্রযুক্তি এবং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যেমন শব্দ সংকেত, লেজার আলো বা অন্যান্য পরিবেশবান্ধব উপায়।এই ঘটনা যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্কের সৃষ্টি করলেও, বিমান সংস্থা এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
যাত্রীরা পাইলট এবং ক্রু সদস্যদের দক্ষতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। একজন যাত্রী বলেন, “আমরা যখন জানতে পারলাম বিমানে সমস্যা হয়েছে, তখন খুব ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু পাইলটের শান্ত এবং দ্রুত সিদ্ধান্তের জন্য আমরা সবাই নিরাপদে আছি।”বিমান সংস্থা যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সুবিধার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
‘বিক্রম ৩২-বিট’—ভারতের মহাকাশ প্রযুক্তিতে নতুন যুগের সূচনা
এই ঘটনা বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার গুরুত্ব এবং পাইলটদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা আরও একবার তুলে ধরেছে। আশা করা যায়, তদন্তের মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে এড়ানোর জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।