ওড়িশায় বিজেপি সাংসদ প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিজেপি। এই ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সংসদে ঘটে, যখন তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয় এবং দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। বিজেপি দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) অবৈধভাবে বিজেপি সাংসদের ওপর শারীরিক আক্রমণ চালিয়েছেন, যা সংসদের শৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করেছে।
স্বাস্থ্যেও ‘রুশ বিপ্লব’, বিনামূল্যে বিশ্বকে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন দেবে পুতিনের দেশ
এই উত্তেজনার মাঝে, নাগাল্যান্ড থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ ফাঙ্গনন কন্যাক একটি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, যে সময় গন্ডগোল হচ্ছিল, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী তাঁর শরীরের কাছাকাছি চলে এসেছিলেন এবং চিৎকার করতে শুরু করেন। কন্যাক বলেন, “রাহুল গান্ধী আমার কাছে চলে এসে চিৎকার শুরু করেছিলেন। আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। একজন সাংসদের কাছ থেকে এমন আচরণ আমি কখনও আশা করিনি।” তাঁর এই বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং বিজেপি তার অভিযোগকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
ফাঙ্গনন কন্যাকের অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তবে এটি সংসদে আচরণের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রশ্ন উঠিয়ে দেয়। কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলের নেতা, যারা জনগণের কাছে নৈতিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কন্যাকের অস্বস্তির বর্ণনা থেকে পরিষ্কার হয় যে, সংসদে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সাংসদদের মধ্যে একটি সাধারণ শিষ্টাচারের মাপকাঠি থাকা উচিত।
রাহুলের ধাক্কায় জখম বিজেপি সাংসদ, কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ বিজেপি
বিজেপির পক্ষ থেকে এই ঘটনাটিকে কংগ্রেসের স্বাভাবিক আচরণ হিসেবে তুলে ধরতে চাওয়া হচ্ছে, যেখানে তারা দাবি করছে যে কংগ্রেস দলটি সংসদে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি করে এবং বিরোধী দলের নেতারা এই ধরনের আচরণে লিপ্ত হন। বিজেপি সাংসদদের ওপর শারীরিক আক্রমণের বিষয়টি নিয়ে দলের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদিও কংগ্রেস পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন স্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া হয়নি, তবে তারা প্রতিপক্ষকে অস্বস্তিতে ফেলতে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে থাকে, তা ইতিমধ্যে স্পষ্ট।
এদিকে, রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ কন্যাকের অভিযোগের পর থেকে রাহুল গান্ধী সম্পর্কে নানা ধরণের মন্তব্য উঠে আসছে। কন্যাকের মত, একজন সাংসদ হিসেবে সংসদে আচরণের ক্ষেত্রে একটি নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত, এবং এতে কোনো ধরনের উত্তেজনা বা শারীরিক সহিংসতা ঠিক নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের অভিযোগ সংসদে উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে এবং প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আরও নানা ধরনের দোষারোপের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ভবিষ্যৎ যুদ্ধের প্রস্তুতি! এবার মহাকাশে টহল দেবে ভারতীয় সেনা
তবে, একদিকে যেখানে কন্যাক রাহুল গান্ধীর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, সেখানে অন্যদিকে বিজেপি এই ঘটনাটিকে তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করার একটি সুযোগ হিসেবে নিতে চায়। অভিযোগের তদন্ত শুরুর পর, পার্লামেন্টে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে দলগুলি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবে, তবে এই পরিস্থিতি সংসদের শৃঙ্খলা ও কার্যকারিতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলছে।
অবশ্য, এই বিতর্কের ফলে সংসদের কার্যক্রমে আরো বিভাজন হতে পারে এবং এর ফলে জনগণের সামনে রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।