মুম্বই: ২০০৬ সালের মুম্বইয়ে ধারাবাহিক ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় বম্বে হাই কোর্টের দেওয়া চমকপ্রদ রায় স্থগিত করল দেশের শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ৭/১১ বিস্ফোরণ মামলায় বম্বে হাই কোর্টে যে ১২ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে, আপাতত তাঁদের পুনরায় গ্রেফতার করা যাবে না। তবে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, এই রায়কে ভবিষ্যতে দৃষ্টান্ত (precedent) হিসেবে ধরা যাবে না, এবং এটি অন্য কোনও MCOCA মামলার উপর প্রভাব ফেলবে না (Mumbai Train Blasts Verdict)।
এ দিন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেখানে মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা মামলাটি জরুরি শুনানির জন্য উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, “সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অত্যন্ত গম্ভীর ও সংবেদনশীল একটি বিষয়।”
বিস্ফোরণ, মৃত্যু, এবং পাল্টা রায়
২০০৬ সালের ১১ জুলাই সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের পশ্চিম রেলপথে ছয়টি লোকাল ট্রেনে বিস্ফোরণ ঘটে। মৃত্যু হয় ১৮৯ জনের, আহত হন ৮০০-র বেশি। ২০০৯ সালে বিশেষ আদালত ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে— যার মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু চলতি সপ্তাহে বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি অনিল কিলোর এবং শ্যাম চাঁদকের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মামলায় প্রমাণের ঘাটতি রয়েছে এবং এই ১২ জনের অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি “বিশ্বাসযোগ্য নয়”।
‘চমকপ্রদ’ বলেছিলেন ফড়নবীস
এই রায় ঘোষণার পরই মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস প্রতিক্রিয়া দেন, একে “বিস্ময়কর ও হতবাক করা” রায় বলে উল্লেখ করে জানান, রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবে।
সুপ্রিম কোর্টের বার্তা
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, হাই কোর্টের দেওয়া খালাসের রায় আপাতত স্থগিত থাকলেও অভিযুক্তদের পুনরায় গ্রেফতার করা হবে না। মামলার আইনি দিকগুলি পর্যালোচনার জন্য নোটিস জারি করা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিন এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার সার্বিক বৈধতা ও তদন্ত প্রক্রিয়ার মান নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই মামলার রায় শুধু ১২ জন অভিযুক্তের ভবিষ্যৎ নয়, বরং ভারতের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও তদন্তে নির্ভরযোগ্যতার প্রশ্নকেও নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।