স্ত্রী ও প্রেমিকের হাতে নির্মম খুন স্বামী, ১৫ দিন পর উদ্ধার দেহ

মুম্বইয়ের নালাসোপারায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ৪০ বছর বয়সী বিজয় চবন নামে এক ব্যক্তির পচাগলা মৃতদেহ (Man Murdered) উদ্ধার হল তাঁরই বাড়ির মেঝের নিচ…

স্ত্রী ও প্রেমিকের হাতে নির্মম খুন স্বামী, ১৫ দিন পর উদ্ধার দেহ

মুম্বইয়ের নালাসোপারায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ৪০ বছর বয়সী বিজয় চবন নামে এক ব্যক্তির পচাগলা মৃতদেহ (Man Murdered) উদ্ধার হল তাঁরই বাড়ির মেঝের নিচ থেকে, নিখোঁজ থাকার ১৫ দিন পর। এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত বিজয়ের স্ত্রী চমন ও তাঁর প্রেমিক মনু। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত এবং টাকার লোভেই ঘটানো হয়েছে।

গত ১৫ দিন ধরে ভাইয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বিজয়ের ভাইয়েরা। বারবার ফোনেও যোগাযোগ না হওয়ায় তাঁরা বিজয়ের বাড়িতে যান। তখন চমন জানায় যে, বিজয় কাজের জন্য বোরিভালি, কান্দিভালি অথবা malad গেছেন। কিন্তু সন্দেহ থেকেই যায়।

   

১৯ জুলাই চমন তাঁর সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে হঠাৎই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, যাওয়ার আগে সে একটি দোকান থেকে তিনটি সামোসা কিনেছে। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় বিজয়ের পরিবার বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। তল্লাশিতে বাড়িতে অস্বাভাবিক কিছু চোখে না পড়লেও তিনটি নতুন ও আলাদা রঙের টাইলস তাঁদের নজরে আসে।

এই তিনটি টাইলস থেকে উঠে আসে ভয়াবহ সত্য। সন্দেহ হওয়ায় পরিবারের লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে খোঁড়াখুঁড়ি করে এবং টাইলসের নিচে কালো প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়া পচাগলা মৃতদেহ খুঁজে পায়। এটি বিজয় চবনের দেহ বলে চিহ্নিত হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার ১২ দিন আগে চমন বাড়িতে একটি ৩.৫ ফুট গভীর ও ৬ ফুট লম্বা গর্ত খুঁড়িয়ে নেয়। ২ দিন পর সেই গর্তে টাইলস বসাতে এক টাইলস মিস্ত্রিকে ডেকে ১২০০ টাকা দেয়।

Advertisements

বিজয় ছিলেন একজন গৃহ সংস্কার কন্ট্রাক্টর। সূত্রের খবর, এক মাস আগে একটি ইনস্যুরেন্স পলিসি থেকে ৬ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন তিনি। এছাড়া তাঁর অ্যাকাউন্টে আরও ২-৩ লক্ষ টাকা ছিল এবং তিনি একটি নতুন বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছিলেন। পুরনো বাড়িটি ইতিমধ্যেই স্ত্রীর নামে করে দিয়েছিলেন।

তদন্তে উঠে এসেছে, চমন বিজয়ের ফোন থেকে একাধিক ওটিপি জেনারেট করে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন এটিএম থেকে টাকা তোলেন। সঠিক পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।

এই ঘটনার পেছনে রয়েছে চমন ও তাঁর প্রতিবেশী প্রেমিক মনুর মিলিত ষড়যন্ত্র। জানা গিয়েছে, একবার মনুর মা তাদের দু’জনকে কথা বলতে দেখে মনুর ফোন কেড়ে নেন ও দুদিন কলেজ যেতে দেননি। যদিও পরে ফোন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পরে চমন ও মনু, সঙ্গে চমনের ছেলে — তিনজনেই এখন পলাতক।

এই ঘটনায় পুলিশ চমন ও মনুর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে এবং তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। মুম্বইয়ের এক শান্ত বসতির মধ্যে এমন নারকীয় ঘটনা ঘিরে এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য।