মুম্বই, ৩১ অক্টোবর ২০২৫। মুম্বাইয়ের কেইএম হাসপাতালের ভিতরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে, যা ‘লাভ জিহাদ’-এর অভিযোগকে কেন্দ্র করে সামাজিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ২৬ বছর বয়সী ডাক্তার বিশাল যাদবকে তাঁর প্রেমিকার তিন ভাই ফরিদ খান, নাবিল এবং আলিশান ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে গুরুতর আহত করেছে। হাসপাতালের কর্মরত অবস্থায় এই হামলা হয়, এবং বিশাল এখন আইসিইউ-তে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
পুলিশ তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার (আইপিসি ৩০৭) মামলা দায়ের করেছে, এবং তাদের ধরতে তীব্র অভিযান চলছে। এই ঘটনা মুম্বইয়ের চিকিৎসক সমাজকে হতবাক করেছে, এবং হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। বিশাল যাদব, যিনি কেইএম হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের রেসিডেন্ট ডাক্তার, তাঁর ডিউটি শেষ করে ওয়ার্ড থেকে বের হচ্ছিলেন।
Vivo X300 FE শীঘ্রই Snapdragon 8 Gen 5 প্রসেসর ও শক্তিশালী ফিচার সহ আসছে
হঠাৎ তিন যুবক ফরিদ (২৮), নাবিল (২৫) এবং আলিশান (২২) তাঁকে ঘিরে ধরে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা বিশালকে পিছন থেকে ধরে পেট, বুক এবং পিঠে একাধিক ছুরিকাঘাত করে। সহকর্মী ডাক্তার এবং নার্সরা চিৎকার করে ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। বিশাল রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে অস্ত্রোপচার চলছে। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, “তাঁর পেটে গভীর ক্ষত, ফুসফুসে আঘাত এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।”পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, হামলার পিছনে ‘লাভ জিহাদ’-এর অভিযোগ। বিশালের সঙ্গে হামলাকারীদের বোনের (২৩) প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে।
মেয়েটি মুম্বইয়ের একটি কলেজের ছাত্রী, এবং বিশালের সঙ্গে তার পরিচয় হাসপাতালে চিকিৎসার সময় হয়। পরিবারের অভিযোগ, বিশাল তাকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার চেষ্টা করছিলেন। ফরিদ খানের বন্ধু এক সাক্ষাৎকারে বলেছে, “আমাদের বোনকে সে ভুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা বারবার সতর্ক করেছি, কিন্তু সে শোনেনি।” কিন্তু বিশালের পরিবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তার বাবা, যিনি উত্তরপ্রদেশের একজন শিক্ষক, বলেছেন, “আমার ছেলে কোনো ধর্মান্তরণের কথা বলেনি। এটা প্রেমের সম্পর্ক ছিল, কিন্তু তারা ধর্মের নামে খুন করতে চাইছে।”পুলিশ কমিশনার বিবেক ফনসালকর জানিয়েছেন, “আমরা আইপিসি ৩০৭, ১২০বি (ষড়যন্ত্র) এবং ৩৪ (যৌথ অপরাধ) ধারায় মামলা দায়ের করেছি। তিনজনকে ধরতে স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে।”
সিসিটিভি ফুটেজ এবং মোবাইল লোকেশনের ভিত্তিতে তারা মুম্বাইয়ের বাইরে পালিয়ে যেতে পারে বলে সন্দেহ। এই ঘটনা মুম্বাইয়ের চিকিৎসক সমাজকে ক্ষুব্ধ করেছে। রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আরডিএ) ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে। একজন ডাক্তার বলেছেন, “হাসপাতালের ভিতরে এই ধরনের হামলা অকল্পনীয়। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?” কেইএম হাসপাতালে এখন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, এবং প্রবেশপথে চেকিং বাড়ানো হয়েছে।



