মুম্বই: ছদ্মবেশে মাদক (Smuggling Drugs) পাচারের চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এল মহারাষ্ট্রে। ব্যস্ত বান্দ্রা রেলওয়ে স্টেশনের কাছে কলা বিক্রেতা সেজে মাদক পাচার করছিলেন ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ। শুক্রবার গভীর রাতে ক্রাইম ব্রাঞ্চের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত মহম্মদ আলি আব্দুল গফ্ফার শেখ। তাঁর কাছ থেকে ১৫৩ গ্রাম এমডি (MD) ড্রাগস উদ্ধার হয়েছে, যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় ৩৫.৩০ লক্ষ টাকা বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, মহম্মদ আলি বান্দ্রা স্টেশনের সামনে রোজই কলার ঠেলা নিয়ে ব্যবসা করতেন। তবে এই ব্যবসার আড়ালেই চলছিল মাদক পাচারের কাজ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইউনিট ৯ টিম একটি বিশেষ অভিযান চালায়। শুক্রবার রাতে বান্দ্রার মহারাষ্ট্রনগর রোড এবং বাস ডিপোর কাছ থেকে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা অভিযুক্তকে পাকড়াও করেন। এরপর তাঁর ঠেলাগাড়ি তল্লাশি চালিয়ে একটি লোহার বাক্স থেকে মাদকভর্তি ব্যাগ উদ্ধার হয়।
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া মাদকের ওজন ১৫৩ গ্রাম এবং এর বাজারমূল্য প্রায় ৩৫.৩০ লক্ষ টাকা। এই ঘটনায় নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস (NDPS) আইন অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে। শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলে তাঁকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশি জেরায় মহম্মদ আলি স্বীকার করেছেন যে আর্থিক সঙ্কটই তাঁকে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে দেয়। বান্দ্রা স্টেশনের সামনে কলা বিক্রি করলেও সেই আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে তিনি মাদক পাচারের কাজে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে পুলিশ এই পাচারচক্রের উৎস খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে। তাঁকে মাদক সরবরাহকারীরা কারা, কতদিন ধরে এই ব্যবসা চালাচ্ছিলেন, তাঁর কোনও সহযোগী আছে কি না এবং আগেও অপরাধমূলক রেকর্ড রয়েছে কি না—এসব দিক নিয়ে তদন্ত চলছে।
এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ‘‘আমরা গোপন সূত্রে খবর পাই যে বান্দ্রা স্টেশনের সামনে এক কলা বিক্রেতা আসলে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত। শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকে আমাদের টিম ওঁকে নজরে রাখে এবং সঠিক সময়ে আটক করে। তল্লাশিতে আমরা মাদক উদ্ধার করি। তদন্তের স্বার্থে আরও তথ্য গোপন রাখা হয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বান্দ্রা স্টেশন এলাকায় এই প্রথমবার এভাবে কোনও ফল বিক্রেতার কাছ থেকে এত বড় পরিমাণে মাদক উদ্ধার হয়েছে। এতে এলাকায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ব্যস্ত রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত হয়। পুলিশের দাবি, এই অভিযানের মাধ্যমে তারা একটি বড় মাদকচক্রের সূত্র হাতে পেয়েছে।
এখন পুলিশ আরও কয়েকটি সূত্র ধরে তদন্ত চালাচ্ছে। মুম্বই জুড়ে মাদক পাচারের নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করতে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য মুম্বই শহরকে মাদকমুক্ত করা। এর জন্য যত বড় অভিযান প্রয়োজন, তা করা হবে।’’