প্রতিবেদন, গাড়িচালক, পিওন ও নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগের জন্য বেরিয়েছিল বিজ্ঞাপন। শূন্য পদের সংখ্যা মাত্র ১৫। ওই ১৫টি শূন্য পদের জন্য মোট ১১ হাজার প্রার্থী আবেদন করেছেন। পিওন পদে চাকরির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল দশম শ্রেণি পাস। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল পিওন পদে চাকরি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন স্নাতকোত্তর, পিএইচডি, এমবিএ, এমনকী ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ যুবক-যুবতীরা। শুধু তাই নয়, বিচারক পদে নিয়োগ হওয়ার অপেক্ষায় থাকা এক তরুণও পিওন পদে আবেদন করেছেন। কর্মসংস্থানের এই ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে এসেছে মধ্যপ্রদেশে।
বিজেপি বরাবরই দাবি করে, তাদের আমলে দেশে কর্মসংস্থান অনেক বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রতিবছর এক কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপির ওই দাবি, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যে কতটা অন্তঃসারশূন্য তা বোঝা গেল মধ্যপ্রদেশের গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের সরকারি পিওন, গাড়িচালক, নিরাপত্তা রক্ষী পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শনি ও রবিবার ছিল লিখিত পরীক্ষা। ওই ১৫টি শূন্য পদে পরীক্ষা দিতে হাজির হয়েছিলেন প্রায় ১১ হাজার বেকার যুবক যুবতী। শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটক থেকেও অনেকেই আবেদন করেছেন। এক আবেদনকারী বলেছেন, তিনি পিওন পদে আবেদন করেছেন। তবে তিনি পিএইচডি করেছেন। গাড়ি চালকের পদে আবেদন করেছেন বিচারক হওয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এক যুবক।
ওই যুবক জানিয়েছেন, তাঁদের এতটাই আর্থিক অভাব যে বইপত্র কেনার টাকা নেই। তাই তিনি গাড়িচালকের পদে আবেদন করেছেন। আপাতত চাকরি পেলে সেই বেতন থেকে তিনি প্রয়োজনীয় বইপত্রগুলি কিনতে পারবেন। কয়েকদিন আগেই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেছিলেন, আমরা প্রতি বছর ১ লক্ষ যুবক-যুবতীকে চাকরি দেব। যে পদগুলি দীর্ঘদিন শূন্য পড়ে রয়েছে সেগুলি দ্রুত পূরণ করার ব্যবস্থা করব। তবে প্রত্যেককে সরকারি চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে সকলেরই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে সরকার। যেখানে প্রতি বছর ১ লাখ লোককে চাকরি দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সেখানে কিভাবে মাত্র ১৫ টি পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ৩৩ লক্ষ। রাজ্যে স্কুল শিক্ষা দফতরে প্রায় ৩১ হাজার শিক্ষকের পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অন্যান্য দফতরেও বিপুল পরিমাণ শূন্য পদ রয়েছে। রাজ্যে প্রচুর শূন্যপদ থাকলেও সেই পদগুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় অনেকেই পিওন, গাড়িচালকের পদে আবেদন করতে বাধ্য হয়েছেন।
কয়েকদিন আগে মধ্যপ্রদেশের ফুটপাতে দোকান দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্পের সুবিধা পেতে প্রায় ১৫ লক্ষ আবেদন জমা পড়ে। যার মধ্যে প্রায় ১ লাখ আবেদন গৃহীত হয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে ৯০ শতাংশই ছিলেন স্নাতক।