উৎসবের আবহে শোকের ছায়া: Cough Syrup খেয়ে ৬ শিশুর মৃত্যু!

ভোপাল: উৎসবের আবহে মর্মান্তিক শিশু মৃত্যুর সাক্ষী থাকল মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া জেলা। বর্ষার অময় আবহাওয়া পরিবর্তনের জেরে সর্দি-কাশী-জ্বরে ভোগে অনেক শিশুই। সাধারণ জ্বর-কাশীর উপসর্গ দেখা দিলে…

ভোপাল: উৎসবের আবহে মর্মান্তিক শিশু মৃত্যুর সাক্ষী থাকল মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া জেলা। বর্ষার অময় আবহাওয়া পরিবর্তনের জেরে সর্দি-কাশী-জ্বরে ভোগে অনেক শিশুই। সাধারণ জ্বর-কাশীর উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল, কাশীর সিরাপ (Cough Syrup) খেয়েই সাধারণত সুস্থ হন রোগীরা। কিন্তু সেই কাশীর সিরাপই প্রাণ কাড়ল ৫ বছরেরও কম বয়সী শিশুদের।

Advertisements

জানা গিয়েছে, সাধারণ জ্বর-কাশীর উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ছিন্দওয়াড়া জেলার স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ মত ওষুধ এবং কফ সিরাপ খেয়েছিল ওই ৬ শিশু। তারপর সুস্থ হয়ে উঠলেও ফের কিছুদিন পর অসুস্থ বোধ করে তারা। মূত্রত্যাগে গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়। পরিস্থিতি বুঝে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, গুরুতর কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে শিশুদের।

   

কিডনি বায়োপসিতে ডাইথিলিন গ্লাইকল বিষক্রিয়া ধরা পড়ে। জানা গিয়েছে, মৃত শিশুদের কোল্ড্রিফ এবং নেক্সট্রো-ডিএস সিরাপ (Cough Syrup) খাওয়ানো হয়েছিল। এই সিরাপ দুটির বিষক্রিয়ার জেরে কিডনি বিকল হয়ে মারা যায় ৬ শিশু। এক সদ্য সন্তানহারা মা বলেন, “আমার বাচ্চা কোনদিন অসস্থ হয়নি। সাধারণ জ্বর কাশির জন্য যে সন্তান হারাবো ভাবতেও পারিনি”। সন্তানহারার শোকে ভেঙে পড়েছে ওই ৬ জন শিশুর পরিবার। কফ সিরাপ খাওয়ানোর ফলে মৃত্যুর ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা।

বাতিল করা হয়েছে ওই দুটি Cough Syrup

অন্যদিকে, ছিন্দওয়ারার কালেক্টর শিলেন্দ্র সিং তাৎক্ষণিকভাবে জেলা জুড়ে দুটি সিরাপ (Cough Syrup) বিক্রি নিষিদ্ধ করেছেন এবং ডাক্তার, ফার্মেসি এবং অভিভাবকদের কাছে একটি জরুরি পরামর্শ জারি করেছেন। কালেক্টর সিং বলেন, “বায়োপসি রিপোর্টে দূষিত ওষুধকেই কিডনি বিকল হওয়ার কারণ হিসেবে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মৃত শিশুদের গ্রাম থেকে নেওয়া জলের নমুনায় কোনও সংক্রমণ দেখা যায়নি। তাই ঘটনায় ওষুধের যোগসূত্র উপেক্ষা করা যায় না।”

ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে, জেলা প্রশাসন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) থেকে একটি দলকে ডেকে পাঠায়। সেইসঙ্গে, ভোপালের স্বাস্থ্য বিভাগের দুই সদস্যের একটি দলও পারাসিয়া, নিউটন চিকলি এবং আশেপাশের গ্রামগুলিতে পৌঁছয়। কর্মকর্তারা পরিবারের সাক্ষাৎকার নেন, ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করেন এবং অন্যান্য আক্রান্ত শিশুদের সনাক্ত করার জন্য ঘরে ঘরে জরিপ করেন।

প্রতিনিধি দলের চিকিৎসক ডঃ নরেশ গোনার জানিয়েছেন যে ২৪শে আগস্ট প্রথম সন্দেহভাজন রোগীর খবর পাওয়া যায় এবং ৭ই সেপ্টেম্বর প্রথম মৃত্যু ঘটে। “২০শে সেপ্টেম্বরের পর থেকে, প্রস্রাব ধরে রাখা এবং কিডনি জটিলতার আরও ঘটনা দেখা দিয়েছে। এটি ভাইরাল সংক্রমণের জন্য একটি সংবেদনশীল সময়, তবে এত শিশুর হঠাৎ কিডনি ব্যর্থতা আরও বিপজ্জনক কিছু নির্দেশ করে,” তিনি বলেন। ICMR টিম ইতিমধ্যেই আরও বিশ্লেষণের জন্য পুনের ভাইরোলজি ইনস্টিটিউটে রক্ত এবং ওষুধের নমুনা পাঠিয়েছে। মৃত শিশুদের পরিবারের তরফে তদন্ত এবং বিচারের দাবি করা হচ্ছে।