ফেল সাত-তারা সব হোটেলও! জানুন ভারতীয় রেলের এমন পাঁচ বিলাসবহুল ট্রেন সম্পর্কে

সময়ের সঙ্গে ভারতীয় রেলের পরিষেবার উন্নতি হয়েছে। আধুনিকতার ছোঁয়াও লেগেছে ট্রেনগুলিতে। পরিচ্ছন্নতা বা গতিবেগ দু’টিতেই এসেছে স্বাচ্ছন্দ্যও। তার মাঝেও অভিযোগ বিস্তর। বেশিরভাগই পরিষবা সংক্রান্ত। তবে…

most expensive trains of indian railways , ভারতীয় রেলের ব্যয়বহুল পাঁচটি ট্রেন

সময়ের সঙ্গে ভারতীয় রেলের পরিষেবার উন্নতি হয়েছে। আধুনিকতার ছোঁয়াও লেগেছে ট্রেনগুলিতে। পরিচ্ছন্নতা বা গতিবেগ দু’টিতেই এসেছে স্বাচ্ছন্দ্যও। তার মাঝেও অভিযোগ বিস্তর। বেশিরভাগই পরিষবা সংক্রান্ত। তবে ভারতীয় রেলেরও বেশ কয়েকটি ট্রেন আছে যেগুলির পরিষেবা তাক লাগাবে। হার মানাবে সাত তারা হোটেলকেও।

এইসব ট্রেনের বৈভব, আভিজাত্য আর পরিষেবা দেখলে চমকাতে হয়। এই ট্রেনগুলিকে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ট্রেনের মধ্যে গণ্য করা হয়। ট্রেনের পরিষেবা দেখলে নিজেকে কোনও রাজা-মহারাজার থেকে কোনও অংশে কম মনে হবে না।

   

পরিষেবার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এইসব ট্রেনে সফরের খরচও বেশ বেশি। একনজরে দেখে নেওয়া যাক ভারতীয় রেলের বিলাসবহুল বেশ কয়েকটি ট্রেন সমন্ধে…

মহারাজা এক্সপ্রেসঃ
মহারাজা এক্সপ্রেস ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ট্রেনগুলির মধ্যে একটি। এটি আইআরটিসি দ্বারা পরিচালিত। মহারাজা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলে বছরের অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত।

এই বিলাসবহুল ট্রেনের যাত্রাপথে পড়ে ১২টি জায়গা। এই জায়গাগুলির বেশিরভাগই শুধু রাজস্থানে। ৩ রাত্রি ৪ দিনের সফর। মহারাজা এক্সপ্রেসে একটি ডিলাক্স কেবিনের ভাড়া আনুমানিক ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। অন্যদিকে, কেউ যদি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করেন, তাহলে ভাড়া পড়বে প্রায় সাড়ে দশ লক্ষ টাকা।

এই ট্রেনের ভ্রমন করলে কোনও যাত্রী রাজস্থানের রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা যেমন করতে পারবেন, তেমনই- জয়পুরে হাতির পোলো ম্যাচে অংশ নিতে ও খাজুরাহো মন্দির পরিদর্শনও করতে পারবেন।

শখ-স্বপ্নের অনন্য অনুভূতি, এবার ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন কোন কোন দেশে?

এই ট্রেনে ময়ূর মহল ও রং মহল নামে দুটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। ময়ূর মহলে ময়ূরের আবহ বা থিম দেখতে পারবেন। পাশাপাশি রং মহলে পাবেন প্রাসাদের সাজসজ্জা। ডাইনিং এরিয়া হোক বা বেডরুম, রেস্তোরাঁ বা বিশ্রামাগার, আপনি যেখানেই যান না কেন বিশ্বমানের লাক্জারি উপভোগ করতে পারবেন। বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে ভারতের এই বিলাসবহুল ট্রেনের।

প্যালেস অন হুইলসঃ
পাঁচতারা হোটেলের মতোই সুন্দর প্যালেস অন হুইলস ট্রেনের অন্দরসজ্জা। এই ট্রেনে রাজস্থানের রাজকীয় সংস্কৃতির আভাস স্পষ্ট। ট্রেন যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮২ সালে। সেই সময় এই ট্রেনে ছিল ব্রিটিশ আমলের রাজকীয় কোচ। এতে তৎকালীন রাজ্যের শাসকদের ব্যক্তিগত কোচও থাকত। এই ট্রেন নতুন দিল্লি থেকে যাত্রা শুরু করে, জয়পুর সওয়াই মাধোপুর, চিতোরগড়, উদয়পুর, জয়সলমির, জোধপুর, ভরতপুর এবং আগ্রার মতো শহরগুলিতে যায়। আপনি যদি এই রাজকীয় রেলযাত্রার অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাহলে অবশ্যই খরচ করতে হবে প্রায় ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা।

আর পোয়াতে হবে না ঝক্কি! রেলযাত্রীদের জন্য বিরাট সুসংবাদ দিলেন রেলমন্ত্রী

রয়্যাল রাজস্থান অন হুইলসঃ
২০০৯ সালে ভারতীয় রেল চালু করেছিল রয়্যাল রাজস্থান অন হুইলস। এই ট্রেনে চেপেও বিলাসবহুলভাবে রাজস্থানের শহরগুলি ভ্রমণ করতে পারবেন। এর সাহায্যে পর্যটকরা রাজস্থানে ৭ দিন ও ৮ রাত ঘুরতে পারেন। তবে এই ট্রেনে ভাড়া অন্যান্য বিলাসবহুল ট্রেনের তুলনায় কিছুটা কম। ডবল শেয়ারিং ডিলাক্স কেবিনের জনপ্রতি ভাড়া ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ২৮০ টাকা।

দ্য গোল্ডেন চ্যারিয়টঃ
দক্ষিণ ভারতের গোয়া, কর্ণাটক, কেরল, তামিলনাড়ু এবং পণ্ডিচেরি ভ্রমণে যায় দ্য গোল্ডেন চ্যারিয়ট ট্রেনটি। ৭ রাতের জন্য ভ্রমণ ভাড়া ১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা। এই ট্রেনটি সবুজ অরণ্য এবং মনোরম জলপ্রপাতের মধ্য দিয়ে যায়। ভ্রমণের সময় ট্রেনের ভিতরে যাত্রী যে কেবল রাজকীয় পরিষেবা পাবেন তা-ই নয়, থাকে স্পা, চিকিৎসা, বার এবং রেস্তোঁরাও।

ডেকান ওডিসিঃ
প্যালেস অন হুইলস-এর মডেলে তৈরি হওয়া ডেকান ওডিসি ট্রেনটি চালু করা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের পর্যটন আকর্ষণ বাড়ানোর লক্ষ্যে। এই ট্রেন মুম্বই থেকে শুরু করে রত্নাগিরি, সিন্ধুদুর্গ, গোয়া, ঔরঙ্গাবাদ, অজন্তা-ইলোরা নাসিক সহ ১০টি জনপ্রিয় গন্তব্য ঘোরায়। একজন ব্যক্তিকে একটি ডিলাক্স কেবিনের জন্য ৪ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮৬৯ টাকা এবং একটি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটের জন্য ১০ লক্ষ ৩২ হাজার ৪৫০ টাকা দিতে হয়।