চীন (China) গালওয়ান উপত্যকায় (Galwan valley clash) ২০২০ সালের জুন মাসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর থেকে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (LAC) বরাবর তার বিশাল সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে। পেন্টাগনের সর্বশেষ প্রতিবেদনে, যা বুধবার প্রকাশিত হয়েছে, এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে চীনের সেনারা কিছুটা বাহিনী সরানোর পরও, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) তাদের অবস্থান এবং সৈন্যসংখ্যা কমায়নি।
ULFA-কে অবৈধ ঘোষণা করতে কড়া পদক্ষেপ, ট্রাইব্যুনাল গঠন করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘‘পিএলএ ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর তার অবস্থান এবং সৈন্যসংখ্যা হ্রাস করেনি এবং তারা এলএসি বরাবর একাধিক ব্রিগেড মোতায়েন রাখার জন্য অবকাঠামো এবং সহায়ক সুবিধা তৈরি করেছে।’’ এর মানে হল যে, ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি চীন তার সামরিক শক্তি ও অস্ত্রশস্ত্রের উপস্থিতি বজায় রেখেছে এবং দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে সেগুলি স্থাপন করতে অবকাঠামো গড়ে তুলেছে।
২০২০ সালের জুনে গালওয়ান উপত্যকায় চীনের পিএলএ এবং ভারতের সীমান্ত সেনাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছিল, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় আঘাত ছিল। ওই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিল, এবং চীনের পক্ষেও হতাহত হয়েছিল বলে জানা যায়। সংঘর্ষের পর, ভারত ও চীন একাধিক দফায় আলোচনা শুরু করে এবং কিছু এলাকায় সৈন্য প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, যদিও কিছু কিছু অঞ্চলে সেনা সরানো হয়েছে, চীন তার বৃহৎ সামরিক উপস্থিতি তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
মহারাষ্ট্র ভোটে ‘অনিয়মের’ অভিযোগ খারিজ কমিশনের, ‘সুপ্রিম’ দ্বারস্থ কংগ্রেস
চীন এলএসি বরাবর শক্তি বজায় রেখে, ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্যকে আরো জটিল করে তুলেছে। পেন্টাগনের রিপোর্টে এমনও বলা হয়েছে যে, চীন তার সেনা উপস্থিতি এবং স্থাপনাগুলির আধুনিকীকরণে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে, যার ফলে তাদের উপস্থিতি শুধুমাত্র বৃদ্ধি পেয়েছে, তা কমেনি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এলএসি বরাবর চীনের শক্তির প্রদর্শন কেবল ভারত নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়া এবং সমগ্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
চীনের সামরিক নীতি এবং ভারতে তার প্রভাব বৃদ্ধির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে ভারত, যা নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এলএসি অঞ্চলে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে, তা চীনের এই চলমান উপস্থিতির কারণে পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে, ভারতীয় সেনাবাহিনীও এলএসি অঞ্চলে শক্তিশালী অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে, এবং সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করছে।
মুম্বইয়ের দুর্ঘটনা, এয়ারব্যাগের আঘাতে প্রাণ হারাল খুদে
অতীতে চীন এবং ভারতের মধ্যে একাধিক সীমান্ত সংঘর্ষ এবং উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, কিন্তু গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। এখন, দুই দেশের মধ্যে একটি বৃহত্তর কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলমান, যেখানে সামরিক উপস্থিতি এবং অবকাঠামো নির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার, চীন তার সামরিক শক্তির উপস্থিতি এলএসি বরাবর ক্রমাগত বাড়াচ্ছে এবং এই অঞ্চলে পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদী উত্তেজনার দিকে এগিয়ে যেতে পারে।