বিহার বিধানসভা নির্বাচনে (Bihar Election) জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) বিপুল সাফল্য অর্জন করেছে, আর তার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির বিজেপি সদর দপ্তরে এসে দলের বিজয় উদযাপন করেন। এনডিএর জয়ের পিছনে কৌশল, ‘মোদি ফ্যাক্টর’ এবং প্রধানমন্ত্রীর গামছা ধারণের মাধ্যমে দেওয়া ঐতিহাসিক বার্তা।
বিহারে এই ঐতিহাসিক জয়ের পেছনে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিত্ব বা ‘মোদি ফ্যাক্টর’ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নির্বাচনী প্রচারে বারবার প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, “এনডিএ এই নির্বাচনে এক অনন্য, অদ্ভুতভাবে বড় বিজয় পেতে চলেছে”, যা শেষ পর্যন্ত বাস্তবে পরিণত হয়। তাঁর এই পূর্বাভাস অনেকেই ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে নেননি, কিন্তু ফলাফল আসার পর তা সত্যি প্রমাণিত হয়।
এনডিএর জয়ের মূল কৌশল ছিল উন্নয়ন, আইনশৃঙ্খলা এবং মহিলাদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া। বিজেপি দলের প্রচারে বারবার উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য প্রতিশ্রুতি ছিল, “দ্বৈত ইঞ্জিন সরকার” বা ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার। এই ধারণা ভোটারদের মধ্যে একটি শক্তিশালী বিশ্বাস সৃষ্টি করেছিল, যে শুধু কেন্দ্রে নয়, বিহারেও এক শক্তিশালী সরকার থাকবে, যা উন্নয়নের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
এছাড়া, বিজেপি দল নারী ভোটারদের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়। তাদের বিভিন্ন প্রকল্প ও স্কিম যেমন ‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও’ এবং মহিলাদের জন্য আর্থিক সহায়তা, মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। বিজেপি দল বিশ্বাস করেছিল যে, বিহারের সমাজে নারীদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার ফলে দল অধিক সমর্থন লাভ করবে। নির্বাচন শেষে দিল্লিতে বিজেপি সদর দপ্তরে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদি এনডিএর জয় উদযাপন করেন। এ সময় তিনি এক বিশেষ দৃশ্য উপস্থাপন করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি গামছা হাতে এই জয়ের আনন্দ উৎযাপন করেন। সেই সঙ্গে তাঁর গলায় ছিল মিথিলা চিত্রকলা দ্বারা সজ্জিত একটি স্কার্ফ। গামছা, যা বাংলার গ্রামাঞ্চলে সাধারণত পরিধান করা হয়, এক বিশেষ সাংস্কৃতিক প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এটি শুধুমাত্র বিহারের এক ঐতিহ্যিক চিহ্ন নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী মোদি তার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক বার্তা দেন। এটি বিহারের মানুষদের সাথে তার সংযোগকে দৃঢ়তর করে এবং একই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরে। মিথিলা পেন্টিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বিহারের সংস্কৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন, যা স্থানীয় জনগণের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।


