সীতামারহি: বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে ফের গর্জে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার সীতামারহিতে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নাম না করে বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন। মোদীর অভিযোগ, “এই মানুষগুলো নিজেদের সন্তানদের মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক বানাতে চায়, আর আপনার সন্তানদের বানাতে চায় রঙদার!”
বিহারের নির্বাচনী রাজনীতি যখন আবার উষ্ণ হয়ে উঠেছে, তখন মোদীর এই বক্তব্য নতুন করে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। তিনি বলেন, “বিহার জঙ্গল রাজে ফিরতে চায় না। জঙ্গল রাজ মানেই কাট্টা, নৃশংসতা, দুর্নীতি আর শত্রুতা। আমাদের রাজ্যে সেই অন্ধকার দিনগুলো আর ফিরে আসতে দেওয়া যাবে না।”
চেন্নাই থেকে কলকাতা? ধোনির এই সতীর্থকে দলে টানতে আগ্রহী শাহরুখের ফ্র্যাঞ্চাইজি!
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জনতার উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। সভায় উপস্থিত মানুষ ‘মোদী-মোদী’ ধ্বনিতে মুখর করে তোলেন সমগ্র প্রেক্ষাগৃহ। মোদী বলেন, “আজ যারা রাজনীতি করছে, তারা শুধু নিজেদের পরিবারকে নিয়ে ভাবে। তাদের রাজনীতি মানে ‘পরিবার প্রথম, জনতা পরে’। কিন্তু আমরা বলি ‘দেশ প্রথম, পরিবার পরে’। এটাই বিজেপির মন্ত্র।”
তিনি আরও বলেন, “বিহারের মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে, শিক্ষা পেতে চায়, উন্নয়ন চায়। কিন্তু যারা আগে রাজ্যে শাসন করেছে, তারা বিহারকে পিছিয়ে রেখেছিল। জঙ্গল রাজে সাধারণ মানুষ ছিল আতঙ্কে, প্রতিদিন শুনতাম খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজির খবর। আজ সেই দিনগুলো বদলে গেছে, বিহার এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে।”
মোদীর এই বক্তব্য মূলত মহাগঠবন্ধন এবং রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির উদ্দেশে ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে “সন্তানদের মুখ্যমন্ত্রী বানানো” মন্তব্যটি স্পষ্টতই পরিবারের রাজনীতিকে নিশানা করে বলা। জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, “আজ কেন্দ্র সরকার কৃষক, যুবক, মহিলা সব শ্রেণির জন্য কাজ করছে। আমাদের সরকারের নীতি হল সুযোগের সমান বণ্টন, কোনও পরিবারের একচেটিয়া দখল নয়।”
এদিন মোদীর বক্তৃতায় উঠে আসে ‘ভ্রষ্টাচার’, ‘অরাজকতা’ এবং ‘আত্মীয়প্রীতি’র প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, “এইসব মানসিকতা আবার ফিরিয়ে আনতে চায় কিছু লোক। কিন্তু বিহারের মানুষ জানে, যারা একসময় ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করত, তাদের আর বিশ্বাস করা যায় না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তৃতা আসন্ন নির্বাচনের প্রচারে বিজেপির কৌশল স্পষ্ট করে দিয়েছে। পারিবারিক রাজনীতি ও জঙ্গল রাজ এই দুই ইস্যুকেই মোদী মুখ্য করে তুলতে চাইছেন। সীতামারহির এই সভা শেষে বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছে, মোদির বক্তৃতা শুধু রাজনৈতিক ভাষণ নয়, বরং “বিহারের আত্মসম্মান রক্ষার আহ্বান”।


