‘আমার মা বোনকেও বিধানসভায় অপমান করা হয়েছে!’ মোদীর পাল্টা তেজস্বী

রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব (Tejashwi) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক বিবৃতির বিরুদ্ধে তীব্র পাল্টা আক্রমণ করেছেন। মোদী সম্প্রতি দাবি করেছিলেন যে, বিরোধীদের ‘ভোটার…

Tejashwi yadav

রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব (Tejashwi) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক বিবৃতির বিরুদ্ধে তীব্র পাল্টা আক্রমণ করেছেন। মোদী সম্প্রতি দাবি করেছিলেন যে, বিরোধীদের ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’র মঞ্চ থেকে তার প্রয়াত মা হীরাবেন মোদীর বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করা হয়েছে।

এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তেজস্বী যাদব বলেন, “কারও মাকে অপমান করা উচিত নয়। আমরা এর পক্ষে নই; এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, নীতীশ কুমারের ডিএনএ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিজেপি বিধায়করা বিধানসভায় আমার মা ও বোনদের বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন।

   

বিজেপি মুখপাত্ররা লাইভ ক্যামেরায় বারবার মহিলাদের অপমান করেছেন। বিহারের জনগণ সবকিছু জানেন। প্রধানমন্ত্রী এতদিন বিদেশে ছিলেন, হাসিমুখে ঘুরছিলেন, আর এখানে এসে কান্নাকাটি শুরু করলেন।”তেজস্বী যাদবের এই মন্তব্য বিহারের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।

তিনি দাবি করেছেন যে, বিজেপি এই ঘটনাকে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য ব্যবহার করছে, যখন তাদের নিজেদের নেতারা বারবার মহিলাদের অপমান করেছেন। তেজস্বী আরও বলেন, “বিজেপি যখন আমাদের উপর অভিযোগ তোলে, তাদের নিজেদের ইতিহাস দেখা উচিত। বিধানসভায় আমার মা বোনের বিরুদ্ধে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

বিজেপি মুখপাত্ররা টেলিভিশনে মহিলাদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু তারা এখন আমাদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।”এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় গত ২৭ আগস্ট, দারভাঙার জালে বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার অধিকার যাত্রার একটি মঞ্চ থেকে। একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তার প্রয়াত মায়ের বিরুদ্ধে অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করছে।

এই মঞ্চে রাহুল গান্ধী এবং তেজস্বী যাদবের ছবি ছিল, যদিও ঘটনার সময় তারা উপস্থিত ছিলেন না। বিজেপি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পাটনার কোতোয়ালি থানায় রাহুল গান্ধী এবং অন্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। বিজেপি দাবি করেছে, এই ঘটনা কংগ্রেস এবং আরজেডি’র নৈতিক পতনের উদাহরণ।

তবে, তেজস্বী এই অভিযোগের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা কখনোই এ ধরনের অপমানজনক ভাষার সমর্থন করি না। কিন্তু বিজেপি নিজেদের দোষ ঢাকতে এই ঘটনাকে বড় করে দেখাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন বিদেশে ছিলেন, তখন তিনি হাসিমুখে ছিলেন, কিন্তু বিহারে এসে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন।

Advertisements

এটি বিহারের জনগণের আবেগ নিয়ে খেলার একটি প্রচেষ্টা।” তেজস্বী আরও অভিযোগ করেন যে, বিজেপি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মিলে ভোটার তালিকায় অনিয়ম করছে এবং ভোটার অধিকার যাত্রার মাধ্যমে তারা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে।কংগ্রেস নেতা পবন খেরা এই ঘটনায় দাবি করেছেন যে, অপমানজনক মন্তব্যগুলো বিজেপি’র ‘এজেন্ট’দের দ্বারা করা হয়েছে।

যাতে যাত্রার প্রতি জনগণের মনোযোগ বিভ্রান্ত করা যায়। তিনি বলেন, “এই মন্তব্যগুলো বিজেপি’র নিজস্ব লোকেরা করেছে। তারা আমাদের যাত্রার সাফল্য দেখে হতাশ এবং এটি থেকে মনোযোগ সরাতে চায়।” এদিকে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন, “দারভাঙায় ভোটার অধিকার যাত্রার মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং তার মায়ের বিরুদ্ধে অপমানজনক ভাষা ব্যবহার অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

এই ঘটনায় বিজেপি এবং আরজেডি-কংগ্রেস জোটের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, “এই ধরনের ভাষা শুধু প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অপমানই নয়, ভারতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতিও অপমান।” অন্যদিকে, আরজেডি নেতা মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী তার মাকে রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন।

বেঙ্গালুরু সফরে ভারতের প্রযুক্তি খাতে উত্থানের প্রশংসা জার্মান বিদেশমন্ত্রীর

এটি ভোটের জন্য আবেগকে উসকে দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা।”এই বিতর্ক বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ভোটার অধিকার যাত্রা, যা ভোটার তালিকায় কথিত অনিয়মের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির জন্য শুরু হয়েছিল, এখন এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে। বিহারের জনগণ এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কীভাবে সাড়া দেবে, তা আসন্ন নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে পারে।