২০৪৭ সালের মধ্যে পারমাণবিক শক্তিতে নয়া দিগন্তের আশ্বাস মোদীর

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Modi) স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে দেশের পারমাণবিক শক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে…

modi

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Modi) স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে দেশের পারমাণবিক শক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা দশ গুণেরও বেশি বাড়ানোর লক্ষ্যে ১০টি নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের কাজ শুরু করবে।

এই পদক্ষেপ দেশের শক্তি নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে জোর দিয়ে বলেছেন যে পারমাণবিক শক্তি ভারতের শক্তি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

   

তিনি বলেন, “ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির জন্য নির্ভরযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব শক্তির উৎস প্রয়োজন। পারমাণবিক শক্তি আমাদের শক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করবে।” ভারতের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং শিল্পায়নের কারণে শক্তির চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে, এবং পারমাণবিক শক্তি এই চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে এই ১০টি নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের কাজ পর্যায়ক্রমে শুরু হবে। এই চুল্লিগুলি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে, যা নিরাপত্তা ও দক্ষতার দিক থেকে বিশ্বমানের হবে। এই প্রকল্পগুলি ভারতের পারমাণবিক শক্তি কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বর্তমানে ভারতের ২৩টি পারমাণবিক চুল্লি রয়েছে, যা মোট ৭,৪৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন। নতুন চুল্লিগুলি নির্মাণের ফলে এই ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতের পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমানের তুলনায় দশ গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছেন।

এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশীয় প্রযুক্তির উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি। ভারতের পারমাণবিক শক্তি বিভাগ (Department of Atomic Energy) এই প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবে।শক্তি নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নপারমাণবিক শক্তি ভারতের শক্তি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানে ভারতের শক্তি চাহিদার একটি বড় অংশ জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করতে সরকার পরিচ্ছন্ন শক্তির উৎসের উপর জোর দিচ্ছে। পারমাণবিক শক্তি এই ক্ষেত্রে একটি টেকসই বিকল্প। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ২০৭০ সালের মধ্যে নেট-জিরো লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

Advertisements

পারমাণবিক শক্তি আমাদের এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।” নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের পরিকল্পনা সত্ত্বেও, এই প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পারমাণবিক শক্তির নিরাপত্তা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এই প্রকল্পের সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তবে, সরকার এই বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) এর মানদণ্ড মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।জনগণ ও প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। পরিবেশবিদরা বলছেন যে পারমাণবিক শক্তি জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে।

তবে, কিছু সংগঠন নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে এই বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই ঘোষণা ভারতের শক্তি খাতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

কুচকাওয়াজ চলাকালীন অসুস্থ ৩৫ পড়ুয়া, SSKM ছুটে গেলেন মমতা

পারমাণবিক শক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধি দেশের শক্তি নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা দশ গুণ বাড়ানোর এই পরিকল্পনা ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ শক্তি উৎপাদনকারী দেশগুলির মধ্যে একটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।