আলিপুরদুয়ারে ১০১০ কোটির প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকল্পের উদ্বোধন মোদীর

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার (alipurduar) জেলায় ১০১০ কোটি টাকার একটি সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন (CGD) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি জোর দিয়ে…

modi in alipurduar

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার (alipurduar) জেলায় ১০১০ কোটি টাকার একটি সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন (CGD) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, ভারতকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার যাত্রায় পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে আলিপুরদুয়ার (alipurduar) এবং পাশের কোচবিহার জেলার ২.৫ লক্ষেরও বেশি পরিবার পাইপযুক্ত প্রাকৃতিক গ্যাস (PNG) সুবিধা পাবে। এছাড়া, এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক এবং শিল্প কারখানাগুলোও এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী হবে।

   

প্রধানমন্ত্রী মোদী এই প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন (alipurduar) 

প্রধানমন্ত্রী মোদী এই প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের (alipurduar) উন্নয়ন ভারতের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। এই সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্প শুধু এই অঞ্চলের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে না, বরং পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে টেকসই উন্নয়নের পথও প্রশস্ত করবে।” তিনি আরও বলেন যে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিষ্কার এবং সাশ্রয়ী জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

এই প্রকল্পের অধীনে, ন্যূনতম কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আলিপুরদুয়ার (alipurduar) এবং কোচবিহার জেলায় প্রায় ১৯টি কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) স্টেশন স্থাপন করা হবে। এই সিএনজি স্টেশনগুলো পরিবহন খাতে পরিষ্কার জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সহায়তা করবে, যা বায়ু দূষণ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য গৃহস্থালি রান্নার জন্য পিএনজি সরবরাহের পাশাপাশি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্যও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে।

কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

আলিপুরদুয়ারে (alipurduar) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই এই রাজ্যের প্রতিটি নাগরিক আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সুবিধা পাক। এই প্রকল্পটি শুধু জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাবে না, বরং স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই ধরনের প্রকল্পগুলো ভারতের ‘নেট জিরো’ লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি বড় পদক্ষেপ।

প্রধানমন্ত্রী এই সুযোগে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো রাজ্যে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে গরিব, আদিবাসী এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” তিনি রাজ্যের যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান যে, তারা উন্নয়নের এই যাত্রায় সামিল হয়ে বাংলাকে একটি সমৃদ্ধ রাজ্যে পরিণত করতে সহায়তা করুন।

Advertisements

অর্থনীতির উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

এই সিজিডি প্রকল্পটি শুধু জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রেই নয়, স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এই অঞ্চলে শিল্প ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় মানুষের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। এছাড়া, সিএনজি স্টেশনগুলো পরিবহন খাতে পরিষ্কার জ্বালানির ব্যবহার বাড়াবে, যা পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়ক হবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে আলিপুরদুয়ার (alipurduar) এবং কোচবিহারের গ্রামীণ এলাকাগুলোতে আধুনিক জ্বালানি সুবিধা পৌঁছে যাবে, যা স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। বিশেষ করে গৃহস্থালি রান্নার জন্য পিএনজি সরবরাহ বাংলার গৃহিণীদের জন্য নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করবে।

এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই, এই রাজ্যের প্রতিটি মানুষ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সুবিধা পাক।” তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যের উন্নয়নের কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন যে, সিকিম, আসাম এবং অন্যান্য রাজ্যে যেভাবে অবকাঠামো এবং জ্বালানি প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে, তেমনি পশ্চিমবঙ্গেও একই গতি আনা সম্ভব।

বিয়েতে সোনা উপহার পেলেই ছাড়? কর আইনের আসল কথা জেনে নিন

তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি

রাজনৈতিক মহল এই প্রকল্পকে স্বাগত জানালেও, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে চলেছে। তবে, বিজেপি নেতারা বলছেন, এই প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আগামী দিনে এই প্রকল্পের ফলাফল রাজ্যের জনগণের জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা দেখার বিষয়। তবে, প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।