নয়াদিল্লি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত সফল—এমনটাই জানিয়েছেন শীর্ষ মার্কিন বিশেষজ্ঞরা। যদিও বৈঠকের আগেই ট্রাম্প ভারতকে শুল্ক বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তারপরও দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য আলোচনা ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে।
মার্কিন বিদেশ ও প্রতিরক্ষা নীতি বিশেষজ্ঞ অ্যাশলি জি টেলিস এবং লিসা কার্টিস, যারা মার্কিন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন, তাঁরা একমত যে, মোদী-ট্রাম্প বৈঠকটি ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
টেলিস বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফরটি মূলত ট্রাম্পকে বোঝানোর ছিল যে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি শক্তিশালী, বিশ্বস্ত এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদার। মোদী এই লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “এটি ছিল ‘মোদী মেকস ম্যাজিক’ সফর, কারণ ট্রাম্পের মতো একজন কঠিন ব্যক্তিত্বকে খুশি করা সহজ কাজ নয়। তবে মোদী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তার উদ্দেশ্য সফলভাবে অর্জন করেছেন।”
বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে, ট্রাম্প ভারতকে শুল্ক বাড়ানোর কথা বলেছিলেন, তবে বৈঠকটি শেষে দুদেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা এবং বাণিজ্য সম্পর্কের ব্যাপক আলোচনা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, এই বৈঠকে ট্রাম্প ভারতকে পঞ্চম প্রজন্মের অত্যাধুনিক F-35 ফাইটার জেট সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছেন। এটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির জন্য একটি বড় সুযোগ, যদিও পূর্বে কিছু প্রতিরক্ষা চুক্তির বাস্তবায়নে দেরি হওয়ায় ভারতের মধ্যে কিছু সন্দেহও রয়েছে। তবে, লিসা কার্টিস বলছেন, “এটি ছিল একটি সফল বৈঠক, কারণ ট্রাম্প ২.০-এর প্রেসিডেন্সির প্রথম মাসেই এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে তুলে ধরেছে।”
লিসা আরও বলেন, “ট্রাম্পের শুল্কবিষয়ক কৌশলটি তার পরিচিত একটি কৌশল। তিনি প্রথমে কঠোর বার্তা দেন, তারপর বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনার পথ খোলেন।”
ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন স্পষ্ট করে যে, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ট্রাম্প উভয়েই নিজেদের দেশের স্বার্থে দৃঢ়ভাবে কাজ করতে আগ্রহী। দুই নেতার মধ্যে একে অপরকে সম্মান ও বিশ্বাসের পরিবেশ ছিল, যা ভবিষ্যতে দুদেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।
এভাবেই, মোদী-ট্রাম্প বৈঠকটি দুই দেশের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আরও শক্তিশালী সহযোগিতার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।