নেপালে চলতে থাকা সহিংস বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাকে মাথায় রেখে ভারত সরকার (Modi Government)কড়া পদক্ষেপের পথে এগোচ্ছে। মঙ্গলবার হিমাচল প্রদেশ এবং পাঞ্জাব সফর থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটি একটি জরুরি বৈঠকে নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে।
এই বৈঠকে নেপালের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ , প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলির পদত্যাগ এবং জেন-জির বিক্ষোভের প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী নেপালের হিংসায় তরুণদের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার সঙ্গে নেপালের জনগণের প্রতি শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “নেপালের স্থিতিশীলতা, শান্তি এবং সমৃদ্ধি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি নেপালের সমস্ত ভাই-বোনদের কাছে বিনীতভাবে শান্তির পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।”
On my return from Himachal Pradesh and Punjab today, a meeting of the Cabinet Committee on Security discussed the developments in Nepal. The violence in Nepal is heart-rending. I am anguished that many young people have lost their lives. The stability, peace and prosperity of…
— Narendra Modi (@narendramodi) September 9, 2025
নেপালের পরিস্থিতি এবং ভারতের উদ্বেগ
নেপালে জেন-জি বিক্ষোভ সরকারের সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধকরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল। এখন এই বিক্ষোভ দুর্নীতি, নেপোটিজম এবং অর্থনৈতিক অসমতার বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছে। এই বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ২২ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।
কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য শহরে বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী ওলির বাসভবন, সংসদ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের বাড়িতে হামলা ও আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এই হিংসায় মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানালের স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকর আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।এই ঘটনা পরিস্থিতির গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই ঘটনাগুলি ভারত-নেপাল সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ১,৭৫১ কিলোমিটার উন্মুক্ত সীমান্তের কারণে।ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকমন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে নেপালের পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব, বিশেষ করে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং সিকিমের নিরাপত্তার উপর আলোচনা হয়। ভারত সরকার ইতিমধ্যে শাস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)-এর মাধ্যমে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে এবং ড্রোন নজরদারি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে নেপালে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত কূটনৈতিক ও নিরাপত্তাগত পদক্ষেপ জোরদার করবে।
মোদীর শান্তির আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী মোদী নেপালের সহিংসতায় তরুণদের প্রাণহানির ঘটনাকে “হৃদয়বিদারক” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “নেপালের যুব সমাজ আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের জীবন হারানো আমাদের সবার জন্য বড় ক্ষতি।” তিনি নেপালের জনগণকে শান্তি ও সংযমের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
বলেছেন, “ভারত সবসময় নেপালের পাশে থাকবে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ নেপাল দেখতে চাই।” তিনি নেপালের রাজনৈতিক দল, সরকার এবং বিক্ষোভকারীদের সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভারতের পদক্ষেপ
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নেপালে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট বাতিলের কারণে দিল্লি থেকে ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটগুলি লখনউতে ডাইভার্ট করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পানিট্যাঙ্কি এবং রক্সল সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ব্রুনেইয়ের বিপক্ষে ৩-০ গোলে এগিয়ে নৌসাদ মুসার ভারত
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর নেপালের বিদেশমন্ত্রী অর্জুন নরসিং কে.সি.-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ভারতের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।নেপালের পরিস্থিতিনেপালে বিক্ষোভকারীরা সরকারি ভবন, রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবন এবং সুপ্রিম কোর্টে আগুন লাগিয়েছে ।