নয়াদিল্লি: ভারতের প্রাচীন চিকিৎসাপদ্ধতি আয়ুর্বেদ এখন বিশ্বব্যাপী আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে, এবং এর পিছনে রয়েছে মোদী সরকারের দূরদর্শী নীতি ও প্রচেষ্টা। ২০২৪ সালের আয়ুর্বেদ দিবসে বিশ্বের ১৫০টি দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যা ভারতীয় ঐতিহ্যের এই প্রাচীন বিজ্ঞানের প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রমাণ।
এছাড়াও, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া সহ পাঁচটি দেশে আয়ুষ একাডেমিক চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে, যা আয়ুর্বেদের শিক্ষা ও গবেষণাকে বিশ্বমঞ্চে ছড়িয়ে দেওয়ার একটি বড় পদক্ষেপ। এই উদ্যোগ ভারতকে বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবা খাতে নেতৃত্ব দেওয়ার পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।আয়ুর্বেদ দিবস, যা প্রতি বছর ধন্বন্তরি জয়ন্তী উপলক্ষে পালিত হয়, এবার বিশ্বব্যাপী একটি অভূতপূর্ব রূপ নিয়েছে।
বিএসএফ-এ জিডি কনস্টেবলদের কীভাবে নির্বাচন করা হয়? ৩৯১টি পদের জন্য চলছে নিয়োগ
ভারত সরকারের আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই বছর ১৫০টি দেশে সেমিনার, কর্মশালা, এবং বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানগুলোতে আয়ুর্বেদের প্রাকৃতিক চিকিৎসা, যোগ, এবং জীবনযাত্রার সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে। আমেরিকা, ব্রিটেন জার্মানি, জাপানের মতো উন্নত দেশ থেকে শুরু করে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এই উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
এই বছরের আয়ুর্বেদ দিবসের একটি বড় অর্জন হলো বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়ুষ একাডেমিক চেয়ার স্থাপন। এই চেয়ারগুলো স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতায় কাজ করবে, যেখানে আয়ুর্বেদের শিক্ষা, গবেষণা, এবং প্রয়োগ নিয়ে কাজ হবে।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের ঢাকায় স্থাপিত চেয়ারটি আয়ুর্বেদিক ঔষধের গবেষণায় স্থানীয় ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার নিয়ে কাজ করবে। অস্ট্রেলিয়ায়, মেলবোর্নের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই চেয়ার প্রাকৃতিক চিকিৎসা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ফোকাস করবে। আয়ুষ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেছেন, “এই একাডেমিক চেয়ারগুলো আয়ুর্বেদকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার অংশ করে তুলবে। আমরা চাই আয়ুর্বেদ শুধু ভারতের নয়, বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার মূলধারায় যুক্ত হোক।”
মোদী সরকারের আয়ুষ মন্ত্রণালয় গত দশকে আয়ুর্বেদের প্রসারে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৪ সালে আয়ুষ মন্ত্রণালয়কে পৃথক মন্ত্রণালয় হিসেবে গঠনের পর থেকে সরকার আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধ, এবং হোমিওপ্যাথির প্রচারে জোর দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সঙ্গে সহযোগিতায় গুজরাটের জামনগরে গ্লোবাল সেন্টার ফর ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন স্থাপন করা হয়েছে।
যা আয়ুর্বেদকে বিশ্বব্যাপী গবেষণার কেন্দ্রে পরিণত করেছে। এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিটি আন্তর্জাতিক সফরে আয়ুর্বেদের প্রচার করছেন। তিনি বলেছেন, “আয়ুর্বেদ আমাদের ঐতিহ্য, এবং এটি বিশ্বের জন্য একটি উপহার। এটি শুধু চিকিৎসা নয়, জীবনযাপনের একটি দর্শন।”