নয়াদিল্লি: পর পর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে রাজধানী দিল্লি। ঘটনার সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ। লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের কাছে দাঁড়ানো একটি সাদা SUV হঠাৎ প্রবল শব্দে বিস্ফোরিত হয়। আশেপাশের এলাকাজুড়ে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আগুন এবং ধোঁয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথম বিস্ফোরণের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পাশের আরেকটি গাড়িতেও বিস্ফোরণ ঘটে।
আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আরও তিনটি গাড়িতে। চারদিক জুড়ে শুরু হয় চিৎকার আর আতঙ্ক। ঘটনাস্থলে NSG পৌঁছেছে। একজন সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেফতার হলেও আতঙ্কের রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই বিশেষ বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, গোয়েন্দা প্রধান অজিত দোভাল,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং । ঘটনার সময় ছিল ঠিক ৬:৫২ মিনিট। লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের সামনে একটা রেড লাইটে থামা স্লো-মুভিং গাড়িযে হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়।
দিল্লি বিস্ফোরণে পুলিশের হাতে সন্দেহভাজন জঙ্গি
দিল্লি পুলিশ কমিশনার সতীশ গোলচা বলেছেন, “গাড়ির ভিতরে ২-৩ জন ছিল, বিস্ফোরণের পর আশেপাশের গাড়ি-অটোতে আগুন লাগে।” আগুনের হলকা এত তীব্র ছিল যে, কাছাকাছি পার্ক করা গাড়িগুলোর শার্সি পুড়ে ছাই হয়ে যায়, কাঁচের জানালা ভেঙে চুরমার। চাঁদনি চৌকের এই এলাকা, যেখানে সন্ধ্যায় দোকানপাটে ভিড় জমে, সেই ভিড়ে চিৎকারের ধ্বনি উঠতে শুরু করে। এক প্রত্যক্ষদর্শী বললেন, “আমি গুরুদ্বারায় ছিলাম, শব্দ শুনে দৌড়ে বেরোলাম।
ধোঁয়ায় কিছু দেখা যাচ্ছে না, লোকজন ছুটোছুটি করছে।” দিল্লি ফায়ার ডিপার্টমেন্টের ৭টা ফায়ার টেন্ডার পৌঁছে আগুন নেভায়, কিন্তু ততক্ষণে ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে। এলাকাটা কার্ডন করে দেওয়া হয়েছে, এনএসজি, এনআইএ, ফরেনসিক টিম সাইটে নেমেছে।
এই বিস্ফোরণ শুধু একটা দুর্ঘটনা নয়, সম্ভবত একটা ষড়যন্ত্রের ফল বলে সন্দেহ হচ্ছে। সন্ধ্যায় একজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাকে জঙ্গি বলে মনে করা হচ্ছে। আগের দিনই ফরিদাবাদে একটা টেরর প্লট ফসিল হয়েছে, যেখানে ৩৬০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, অ্যাসল্ট রাইফেল আর গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে।
একজন ডাক্তার মুজাম্মিল শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আর লক্ষ্ণৌ থেকে আরেকজন মহিলা ডাক্তার শাহিন শাহিদকে ধরা পড়েছে। এসবের সঙ্গে যুক্ত কি এই বিস্ফোরণ? এনআইএ এখন তদন্ত করছে, কিন্তু প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, এটা কার বোম্ব। দিল্লি পুলিশ স্পেশাল সেলের অফিসাররা সাইটে, আর সারা রাজধানীতে হাই অ্যালার্ট ঘোষণা করা হয়েছে। মেট্রো স্টেশন, শপিং মল, ট্রেন স্টেশন—সব জায়গায় সিকিউরিটি চেক বাড়ানো হয়েছে।
মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, এমনকি মুম্বাইয়েও অ্যালার্ট জারি হয়েছে।এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে জরুরি বৈঠক শুরু হয়েছে। পিএমওএ-তে বসা এই মিটিংয়ে গোয়েন্দা প্রধান অজিত দোভাল এবং স্বরাষ্ট্র অমিত শাহ উপস্থিত। সূত্র বলছে, এখানে বিস্ফোরণের পেছনের কারণ, সম্ভাব্য ষড়যন্ত্র এবং ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এর পিছনে পাকিস্তান যোগ প্রমাণিত হলে তা ফের দুই দেশের সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে।

