নয়াদিল্লি: ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্কের সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতায় হঠাৎ ছায়া ফেলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক-বোমা। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জেরে ভারত-সহ একাধিক দেশের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপাতে চলেছেন ট্রাম্প। এই ঘোষণা কার্যকর হবে আগামী ২৭ অগাস্ট থেকে। তারই প্রেক্ষিতে আজ, শুক্রবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (modi attened high level meet)।
শুল্ক নয়, ভৌগোলিক চাপ: ট্রাম্পের লক্ষ্য ইউক্রেন যুদ্ধ?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই শুল্কবৃদ্ধির আসল লক্ষ্য রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা করা, যাতে তারা ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বাধ্য হয়। বিশ্ববাজারে রাশিয়ান তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ভারত, চfন ও তুরস্ক, এই তিন দেশকে কার্যত চাপে রাখতেই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ।
ট্রাম্প সাফ জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ চলতে থাকলে মার্কিন প্রশাসন ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’ জারি করবে রাশিয়ান তেল ক্রয়কারী সব দেশের উপর। শুক্রবারের মধ্যেই সমাধান না হলে, কোনও বাণিজ্য আলোচনাতেও বসবেন না তিনি, এই হুঁশিয়ারি আরও সঙ্কেত দিচ্ছে, এটি শুধুই অর্থনৈতিক চাপ নয়, বরং ভৌগোলিক কূটনৈতিক চালও বটে।
‘অন্যায্য, অযৌক্তিক ও সঙ্গতিহীন’: সাউথ ব্লকের প্রতিক্রিয়া
নয়াদিল্লির বিদেশ মন্ত্রক তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রাম্পের এই হুমকির বিরুদ্ধে। সাউথ ব্লক জানিয়েছে, “এই সিদ্ধান্ত একান্তই অযৌক্তিক, অন্যায্য এবং সঙ্গতিহীন। ভারতের জ্বালানি নীতি সম্পূর্ণরূপে বাজার-নির্ভর এবং ১৪০ কোটিরও বেশি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই প্রধান উদ্দেশ্য।”
‘বালতি বালতি জল ঢেলে দিলেন ট্রাম্প’
এই মাসের শেষে ভারতে মার্কিন বাণিজ্য আলোচনার ষষ্ঠ রাউন্ড হওয়ার কথা ছিল। তার আগে ট্রাম্পের ঘোষণাকে কার্যত সেই প্রক্রিয়ার উপর জল ঢেলে দেওয়া হিসেবেই দেখছেন কূটনৈতিক মহল। ভারতের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই পাঁচ দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এখন সাউথ ব্লক কার্যত প্রতিদিন সকালে আতঙ্কে দিন শুরু করছে, আজ আবার হোয়াইট হাউস থেকে কোন নতুন হুমকি আসে!
মোদীর কূটনীতি কোন পথে?
ট্রাম্পের বেপরোয়া শুল্ক যুদ্ধের আবহে মোদী সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ ঘিরে বাড়ছে কৌতূহল। আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও ঘরোয়া রাজনৈতিক চাপে দাঁড়িয়ে, ভারত কি আরও জোরালো ভাবে ‘স্বাধীন কূটনৈতিক পথ’ ধরে এগোবে, না কি ট্রাম্পের চাপের মুখে কিছুটা নমনীয় হবে নয়াদিল্লি?