মণিপুরের (Manipur Situation) কঙ্গপোকপি জেলার কঙ্গচুপ গেলজাং উপবিভাগে নাগা এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে শনিবার কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে দু’টি গ্রামের মধ্যে একটি আঞ্চলিক বিরোধের কারণে। কঙ্গচুপ গেলজাং উপবিভাগের কনসাখুল গ্রামের নাগা জনগণের সাথে লেইলন ভৈফেই গ্রামের কুকি-জো জনগণের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। কনসাখুল(Manipur Situation) গ্রামবাসীরা দাবি করছেন, লেইলন ভৈফেই তাদের এলাকায় অবস্থিত, তবে লেইলন ভৈফেই গ্রামের বাসিন্দারা এই দাবি কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এই জমি নিয়ে বিরোধের মাঝেই ৭ জানুয়ারি এক নাগা মহিলার উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। এ পরিস্থিতিতে দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কিছু ছোটখাটো সংঘর্ষ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহেশ চৌধুরী ওই উপবিভাগে ২০২৩ সালের বিএনএসএস এর অধীনে এক অনির্দিষ্টকালের জন্য জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংঘর্ষের ফলে কোনো বড় ধরনের আহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারফিউ প্রয়োজন ছিল।
কনসাখুল ও লেইলন ভৈফেই গ্রামগুলোর মধ্যে এখনই যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এই নির্দেশনা পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে আরও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত হতে বেশ কিছু সময় লাগতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, কামজং জেলার আরেকটি ঘটনায় একটি গোষ্ঠী শনিবার অসম রাইফেলসের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প আক্রমণ করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই আক্রমণের পেছনে কাঠবিঘ্রা পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে। কামজং জেলার কাসোম খুলেন গ্রামে অসম রাইফেলসের সদস্যরা কাঠ পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। এতে উত্তেজিত জনতা অসম রাইফেলস ক্যাম্পে হামলা চালায়।
এ সময় অসম রাইফেলসের জওয়ানরা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফেলে এবং আকাশে গুলি চালায়। তবে এই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মণিপুরে এই দুটি পৃথক ঘটনায় সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন তৎপর হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে, তবে উভয় সংঘর্ষের পেছনে থাকা কারণগুলির প্রতি সরকারের নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।