নয়াদিল্লি: মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট একটি তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছে৷ সেখানে বলাহয়েছে, কাউকে ‘মিয়াঁ’ বা ‘পাকিস্তানি’ বলার মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতের অভিযোগ তোলা যায় না৷ তবে নিশ্চিত ভাবেই এই ধরনের মন্তব্যকে শালীনতার পরিপন্থী বলা যেতেই পারে। বিচারপতি বিএ ভি নাগরতনা ও সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ এক মামলার রায়দানকালে এই সিদ্ধান্ত জানায়৷ এই মামলায় এক সরকারি কর্মচারীকে ‘পাকিস্তানি’ বলার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
এ ঘটনায় অভিযোগকারী ছিলেন এক উর্দু অনুবাদক এবং ঝাড়খণ্ডের অস্থায়ী ক্লার্ক। তাঁর অভিযোগ ছিল, তিনি যখন RTI (তথ্য অধিকার) সম্পর্কিত তথ্য দিতে অভিযুক্তের কাছে যান, তখন অভিযুক্ত তাকে গালিগালাজ করেন এবং তাঁর ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করে তাঁকে অপমান করেন। এমনকি তাঁর সরকারি দায়িত্ব পালনেও বাঁধা সৃষ্টি করতে শারীরিক বল প্রয়োগ করেন৷
এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টে মামলা চলছিল৷ সেখানে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা ২৯৮ (ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত), ৫০৪ (শান্তি ভঙ্গের উদ্দেশ্যে অপমান) এবং ৩৫৩ (সরকারি কর্মচারীকে সরকারি কাজ করতে বাধা দেওয়ার জন্য আক্রমণ বা বল প্রয়োগ) অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল৷
তবে, সুপ্রিম কোর্ট ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত খারিজ করে বলেছে, “অভিযোগকারী বলেছেন যে, অভিযুক্ত তাকে ‘মিয়াঁ’ এবং ‘পাকিস্তানি’ বলে ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত করেছেন। অবশ্যই, এই মন্তব্যগুলো অশালীন, কিন্তু এগুলো ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতের পর্যায়ে পড়ে না।”
আদালত আরও বলে, অভিযুক্তের এমন কোনও কার্যকলাপ ছিল না যা শান্তির অবনতি ঘটাতে পারে।
এছাড়া, আদালত জানিয়েছে, “অভিযোগকারীকে আক্রমণ বা শারীরিকভাবে বাধা দেওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি, যা ধারা ৩৫৩ অনুসারে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।”
এই রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, অশালীন ভাষা ব্যবহার করা হলেও, তা ধর্মীয় অনুভূতির আঘাতের সাথে একীভূত হবে না, যতক্ষণ না তা কোনও ধরনের সহিংসতা বা শান্তি ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।