জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের চেতনা জাগাতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (Union Ministry of Defense)। বৃহস্পতিবার মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় শিক্ষা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ পরিষদ (NCERT) চলতি শিক্ষাবর্ষে তিনটি শ্রেণীর পাঠ্যক্রমে দেশের বীর সেনানায়কদের জীবনকাহিনি অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই পাঠ্যক্রমগুলির মধ্যে রয়েছে— অষ্টম শ্রেণির উর্দু বই, সপ্তম শ্রেণির উর্দু বই, এবং অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি বই।
নতুন সংযোজিত অধ্যায়গুলিতে ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ, ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ উসমান এবং মেজর সোমনাথ শর্মার সাহসিকতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে।
নতুনভাবে চালু করা অধ্যায়গুলির লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের সাহস এবং কর্তব্য সম্পর্কে অনুপ্রেরণামূলক বর্ণনা প্রদান করা। ফিল্ড মার্শাল পদমর্যাদাপ্রাপ্ত ভারতের প্রথম অফিসার ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশকে তার ব্যতিক্রমী নেতৃত্ব এবং কৌশলগত দক্ষতার জন্য স্মরণ করা হয়। মহাবীর চক্র এবং পরমবীর চক্রের মরণোত্তর প্রাপক ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ উসমান এবং মেজর সোমনাথ শর্মা জাতির সেবায় তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রতীক হিসেবে রয়ে গেছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে যে জাতীয় যুদ্ধ স্মারককে শিক্ষার সঙ্গে আরও গভীরভাবে যুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রক ও NCERT-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ চলছে। এরই অঙ্গ হিসেবে স্মারক এবং এর তাৎপর্য শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরার জন্য পাঠ্যক্রমে তা যুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লির আইকনিক সেন্ট্রাল ভিস্তার ‘সি’ হেক্সাগনে অবস্থিত জাতীয় যুদ্ধ স্মারকটি দেশের উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এই স্মারক দেশের জন্য আত্মবলিদান করা সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ছাড়াও নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম, সংবেদনশীলতা ও নৈতিকতা গঠনের মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, এই বীর সেনানায়কদের গল্পের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবল সামরিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে না, বরং জীবনের নানা শিক্ষাও অর্জন করবে—যেমন স্থিতিস্থাপকতা, সহানুভূতি, মানসিক দৃঢ়তা এবং জাতি গঠনের গুরুত্ব।
এই উদ্যোগে শিক্ষা ও প্রতিরক্ষা নীতির সংযোগস্থলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে দেশের জন্য আত্মত্যাগ ও গৌরবের বোধ আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।