নয়াদিল্লি: ভারতের আকাশসীমার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি৷ ভারতের প্রথম সুপারসোনিক যুদ্ধবিমান ও ইন্টারসেপ্টর মিগ-২১ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা করল। দীর্ঘ ৬২ বছরের কর্মজীবন৷ এই লেজেন্ডারি জেট ভারতীয় বিমান শক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ইতিহাসে গভীর ছাপ রেখেছে।
অ্যারোব্যাটিক টিমের ফ্লাইপাস্ট
এদিন চণ্ডীগড়ে আয়োজিত ডিকমিশনিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, উর্ধ্বতন আইএএফ কর্মকর্তারা, প্রাক্তন বিমানযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবার। অনুষ্ঠানে মিগ-২১ সহ জাগুয়ার এবং সূর্যকিরণ অ্যারোব্যাটিক টিমের ফ্লাইপাস্ট দর্শকদের মুগ্ধ করে।
ব্যাডাল ও প্যান্থার ফর্মেশন নেতৃত্ব দিয়েছে মিগ-২১, যেখানে এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং নিজে ব্যাডাল ফর্মেশনে স্কোয়াড্রন লিডার প্রিয়া শর্মা-র সঙ্গে ছিলেন। বিশেষ আকর্ষণ ছিল সিমুলেটেড ডগফাইট, যা ২০১৯ সালের বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক-এ মিগ-২১-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্মরণ করায়।
ক্যানন স্যালুট MiG-21 Decommissioning
উৎসবমুখর অনুষ্ঠানে মিগ-২১-কে সিরামোনিয়াল ওয়াটার ক্যানন সালুট দেওয়া হয় এবং এয়ার চিফ প্রতীকীভাবে ফর্ম ৭০০ লগবুক প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ স্মারক পোস্টাল কভার, যা মিগ-২১-এর দীর্ঘ যাত্রার সম্মান জানায়।
মিগ-২১-এর ইতিহাসে স্মরণীয় মুহূর্ত-
- ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান যুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ।
- ধাকার গভর্নরের হাউস আঘাত এবং যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
- ২০১৯ সালে পাকিস্তানি এফ-১৬ ধ্বংস করে মিগ-২১-এর আধুনিক সামরিক দক্ষতা প্রমাণিত।
- সর্বশেষ অপারেশন সিঁদুর-এ সফলভাবে ব্যবহার।
শূন্যস্থান পূরণ করবে তেজস Mk-1 ও Mk-2
মিগ-২১-এর অবসরের পর আইএএফ-এর ফাইটার স্কোয়াড্রনের সংখ্যা ৪২-এর অনুমোদিত সীমার তুলনায় কমে ২৯ স্কোয়াড্রনে দাঁড়িয়েছে। তবে এই শূন্যস্থান ধীরে ধীরে পূরণ হবে তেজস Mk-1 ও Mk-2 এবং রাফালে ফাইটার বিমান অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে।
মিগ-২১ শুধু একটি যুদ্ধবিমান নয়; এটি ভারতের আকাশসীমার প্রতিরক্ষা, সাহসিকতা এবং প্রযুক্তির প্রতীক। এই যাত্রার সমাপ্তি ভারতের সামরিক ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
