গ্যাস ট্রাজেডির স্মৃতি, বিষাক্ত বর্জ পোড়ানোর অ্যাসিড টেস্ট শুরু

ভোপালের ইউনিয়ন কারবাইড প্লান্টে ১৯৮৪ সালের গ্যাস ট্র্যাজেডির সাথে সম্পর্কিত কমপক্ষে ১০ টন বিষাক্ত বর্জ্য পিঠমপুর, মধ্যপ্রদেশের ধর জেলার একটি ইনসিনারেটর ফ্যাসিলিটিতে পোড়ানো হয়েছে। সোমবার…

https://kolkata24x7.in/wp-content/uploads/2025/03/carbide.jpg

ভোপালের ইউনিয়ন কারবাইড প্লান্টে ১৯৮৪ সালের গ্যাস ট্র্যাজেডির সাথে সম্পর্কিত কমপক্ষে ১০ টন বিষাক্ত বর্জ্য পিঠমপুর, মধ্যপ্রদেশের ধর জেলার একটি ইনসিনারেটর ফ্যাসিলিটিতে পোড়ানো হয়েছে। সোমবার এই প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষামূলক পোড়ানোর প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।অফিসাররা দাবি করেছেন যে, পরীক্ষার সময় গ্যাস নিঃসরণ মাপা সীমার মধ্যে ছিল। জানানো হয়েছে, জানুয়ারি মাসে ভোপালের ইউনিয়ন কারবাইড কারখানা থেকে পিঠমপুরে নিরাপদে নিষ্কাশনের জন্য আনা ৩৩৭ টন বর্জ্যের মধ্যে প্রথমে ১০ টন বর্জ্য পোড়ানোর কাজ শুরু হয় গত শুক্রবার।
ইন্দোর ডিভিশন কমিশনার দীপক সিং সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমরা পিঠমপুরে ১০ টন ইউনিয়ন কারবাইড কারখানার বর্জ্য পোড়ানোর প্রক্রিয়া শুক্রবার শুরু করি এবং সোমবার শেষ হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “প্রথম পরীক্ষার সময় গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা সমস্ত অনুমোদিত সীমার মধ্যে ছিল।” এই পুরো প্রক্রিয়া পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের একটি বিশেষ দল দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং পিঠমপুর ও ইন্দোরের বাতাসের গুণমান সাধারণ ছিল। সিং বলেন, “আগামী ৪ মার্চ থেকে দ্বিতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে, যেখানে আরও ১০ টন বর্জ্য পোড়ানো হবে।”

মধ্যপ্রদেশ পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড এক প্রেস বিবৃতিতে জানায়, “এই ইনসিনারেটর থেকে গ্যাস নিঃসরণ পরীক্ষার সময়, যেমন পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM), সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইডস, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন ক্লোরাইড, হাইড্রোজেন ফ্লুরাইড, এবং মোট অর্গানিক কার্বন সবই অনুমোদিত সীমার মধ্যে ছিল।” পোলিউশন বোর্ড আরও জানায়, “প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার সময় গ্যাস নিঃসরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় পরীক্ষার সময়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” এই প্রক্রিয়া সফলভাবে পরিচালনার জন্য মোট ৬০ জন কর্মকর্তার দল কাজ করছে, যার মধ্যে ২০ জন কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য পোলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের কর্মী ছিলেন।

মধ্যপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, ইউনিয়ন কারবাইড কারখানার বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে দূষিত মাটি, রিঅ্যাক্টর অবশিষ্টাংশ, সেভিন (কীটনাশক) অবশিষ্টাংশ, ন্যাফথলিন অবশিষ্টাংশ এবং “অর্ধ-প্রক্রিয়াজাত” বর্জ্য। এছাড়া, পোলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড জানিয়েছে, এই বর্জ্যে এখন আর মিথাইল আইসোসায়ানেট (MIC) গ্যাস নেই, যা ১৯৮৪ সালের গ্যাস ট্র্যাজেডির কারণ ছিল, এবং এতে কোনও পারমাণবিক কণা নেই। উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৮৪ সালের ২-৩ ডিসেম্বর রাতে ইউনিয়ন কারবাইড প্লান্ট থেকে মিথাইল আইসোসায়ানেট (MIC) গ্যাসের ভয়াবহ লিক হওয়ার কারণে ৫,৪৭৯ জন মানুষের মৃত্যু হয় এবং হাজার হাজার মানুষ শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম মারাত্মক শিল্প বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত।

Advertisements

এদিকে, পিঠমপুর শিল্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, কারণ বর্জ্য নিষ্কাশনের প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ হয়েছে। ৩৩৭ টন বর্জ্য বিশেষ ট্রাকে ভোপাল থেকে পিঠমপুরে আনা হয়েছিল জানুয়ারির ২ তারিখে। এটি একটি প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষামূলক পোড়ানোর প্রক্রিয়া, যা মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে পরিচালিত হচ্ছে। হাইকোর্ট ১৮ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে জানিয়েছিল, সমস্ত প্রোটোকল মেনে ১০ মেট্রিক টন বর্জ্য পোড়ানোর প্রথম পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু করতে হবে।