পিএনবি কেলেঙ্কারি: চোকসির প্রত্যর্পণে আর বাধা নেই, রায় বেলজিয়াম আদালতের

Mehul Choksi Extradition Belgium

নয়াদিল্লি: বহুচর্চিত পিএনবি জালিয়াতি মামলায় পলাতক হীরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসিকে দেশে ফেরানোর পথে বড় অগ্রগতি। বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প আদালত জানিয়েছে, তাঁর প্রত্যর্পণে কোনও আইনি বাধা নেই। ভারতের পক্ষ থেকে আনা অভিযোগকে আদালত “গুরুতর ও গ্রহণযোগ্য” বলে স্বীকার করেছে।

Advertisements

চোকসি বেলজিয়ামের নাগরিক নন

১৭ অক্টোবর ঘোষিত রায়ে আদালত জানায়, চোকসি বেলজিয়ামের নাগরিক নন, বরং একজন বিদেশি। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, দুর্নীতি, নথি জাল ও অর্থ আত্মসাতের মতো অভিযোগ রয়েছে-যা বেলজিয়াম আইনেও গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য। আদালতের মতে, ভারতের দণ্ডবিধির ১২০বি, ২০১, ৪০৯, ৪২০ ও ৪৭৭এ ধারায় যেসব অপরাধের উল্লেখ আছে, সেগুলির সঙ্গেই মেলে বেলজিয়ামের ফৌজদারি আইনের প্রাসঙ্গিক ধারাগুলি।

   

তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, প্রমাণ নষ্টের অভিযোগ (ভারতীয় দণ্ডবিধির ২০১ ধারা) বেলজিয়াম আইনে স্বতন্ত্র অপরাধ নয়। তাই এই নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে প্রত্যর্পণ সম্ভব নয়।

রায়ে বলা হয়েছে, চোকসির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে সংঘটিত হয়েছে, এবং এই সময়সীমায় ভারত বা বেলজিয়াম-কোনও দেশেই মামলার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়নি।

চোকসির দাবি Mehul Choksi Extradition Belgium

চোকসির দাবি ছিল, তাঁকে অ্যান্টিগা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং ভারতে ফিরলে রাজনৈতিক প্রতিশোধ ও অমানবিক আচরণের আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু আদালত তাঁর সেই যুক্তি খারিজ করে দেয়, জানায়, এই দাবির পক্ষে কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই।

Advertisements

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, মেহুল চোকসিকে মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলের ১২ নম্বর ব্যারাকে রাখা হবে। সেখানে থাকবে প্রায় ৪৬ বর্গমিটারের জায়গা, দুটি আলাদা কক্ষ ও ব্যক্তিগত শৌচাগার। চিকিৎসা বা আদালতে হাজিরা ছাড়া তাঁকে বাইরে আনা হবে না।

চোকসির তরফে দাখিল করা আন্তর্জাতিক রিপোর্ট ও বিশেষজ্ঞ মতামত আদালত “অপ্রাসঙ্গিক” বলে উড়িয়ে দেয়। বিচারকের মন্তব্য, “ভারতের বিচারব্যবস্থা স্বাধীন নয় বা সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের কারণে তিনি ন্যায্য বিচার পাবেন না, এই আশঙ্কা ভিত্তিহীন।”

এই রায়ে মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে ভারতের দীর্ঘ আইনি লড়াই এক বড় সাফল্যের মুখ দেখল। প্রায় ১৩,৫০০ কোটি টাকার পিএনবি জালিয়াতি মামলায় এখন দেশে ফিরিয়ে এনে তাঁর বিচারের পথ কার্যত প্রশস্ত হল।