হঠাৎ রাজ্য থেকে উধাও ৪ হাজার টন কয়লা, মন্ত্রীর দাবি, বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে!

শিলং: মেঘালয়ে প্রায় ৪,000 টন কয়লা হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। এই ঘটনার জবাবে রাজ্যের…

Meghalaya Coal Controversy

শিলং: মেঘালয়ে প্রায় ৪,000 টন কয়লা হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। এই ঘটনার জবাবে রাজ্যের আবগারি মন্ত্রী কাইরমেন শিল্লা যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা শুধু ব্যতিক্রমী নয়, কার্যত অবিশ্বাস্য (Meghalaya Coal Controversy)।

“মেঘালয়ে দেশের সর্বাধিক বৃষ্টি হয়। কখনও কখনও এত বেশি বৃষ্টি হয় যে কয়লা ভেসে গিয়ে থাকতে পারে। সম্ভাবনাটা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যায় না,” সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন মন্তব্য করেই বিতর্কে জড়ালেন মন্ত্রী শিল্লা।

   

তিনি দাবি করেন, এটি কোনও রকম দায় এড়ানোর চেষ্টা নয়, তবে তিনি স্বীকার করেন যে প্রাকৃতিক কারণে কয়লা বয়ে যাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ রাজ্যের হাতে নেই। একইসঙ্গে তিনি জানান, অবৈধ খননেরও কোনও প্রমাণ নেই বলেই প্রশাসনের দাবি।

আদালতের কড়া অবস্থান: নজরদারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ

মেঘালয়ের রাজাজু ও দিয়েংনগান গ্রামে সংরক্ষিত কয়লা গায়েব হওয়ার পর, হাই কোর্ট রাজ্য প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা করে। আদালতের প্রশ্ন, এত বিপুল পরিমাণ কয়লা নজরদারির মধ্যে থেকেও কীভাবে ‘অদৃশ্য’ হয়ে গেল? সেইসঙ্গে, যারা কয়লা সংরক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রশাসনিক পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

২০১৪ সালে কয়লা খনন নিষিদ্ধ, তবু চলছে অবৈধ উত্তোলনের অভিযোগ

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে জাতীয় সবুজ ট্রাইব্যুনাল (NGT) মেঘালয়ে কয়লা খনন ও পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। অগোছালো, অনিরাপদ ও পরিবেশবিধ্বংসী খননপ্রক্রিয়া বন্ধ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তা সত্ত্বেও, একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যে আজও চলছে অবৈধ কয়লা খনন।

Advertisements

এ বিষয়ে মন্ত্রী শিল্লা বলেন, “প্রমাণ না-থাকলে অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু বলা যায় না। তবে আমি বিশ্বাস করি, যদি মানুষ বাঁচার তাগিদে কিছু করে, তাহলে সেটাকে একেবারে খারাপ বলা যায় না।”

রাজনীতির ছায়া, প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা, দায় এড়াতে পারবে কি সরকার?

অধিকাংশ বিশ্লেষকের মতে, এত বিপুল পরিমাণ কয়লা বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক উপাদানে “ভেসে যাওয়া” কার্যত অসম্ভব। বরং এই ঘটনার পেছনে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও প্রশাসনিক জবাবদিহি প্রয়োজন, যা দীর্ঘদিন ধরেই এই খাতের দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার অভিশাপকে সামনে নিয়ে আসছে।